আজ ২৩শে জুন, পলাশী দিবস
- প্রকাশিত: ০৬:০১:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪
- / 24
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আমবাগানে বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হন। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। এই দিনটি ছিল অন্যান্য দিনের চেয়ে আলাদা, কারণ ওই দিন মুর্শিদাবাদ থেকে ১৫ ক্রোশ দক্ষিণে ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যাসহ পুরো উপমহাদেশের স্বাধীনতার কবর রচিত হয়।
২৩শে জুন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে লর্ড ক্লাইভের একটি যুদ্ধ হয়। নবাবের নিকটাত্মীয়দের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব পরাজিত হন। যুদ্ধক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের কারণে নবাব ষড়যন্ত্রের শিকার হন, ফলে বাংলা হারায় তার স্বাধীনতা এবং পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি হয়।
পলাশী যুদ্ধের পর বাংলা প্রায় দুইশ বছর পরাধীন ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার বিপুল সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করে, যার ফলে বাংলা শ্মশানে পরিণত হয়। পলাশী যুদ্ধের পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে। তারা এদেশে তাদের কিছু সমর্থক তৈরি করে, যারা দেশের উপর একের পর এক আগ্রাসন চালায়।
পলাশীর রক্তাক্ত ইতিহাস, পরাধীনতার ইতিহাস, মুক্তিসংগ্রামীদের পরাজয়ের ইতিহাস, ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস, ট্রাজেডি ও বেদনাময় এক শোক স্মৃতির ইতিহাস। এই নৃশংস ও কলঙ্কজনক ঘটনার মাধ্যমে কলকাতা কেন্দ্রিক একটি নতুন উদীয়মান পুঁজিপতি শ্রেণীর উত্থান ঘটে। বঞ্চিত শ্রেণী তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকে, যার ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সাধারণ মানুষদের তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবতে থাকে। দীর্ঘ দুইশ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফলে অবশেষে তারা বাংলা থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়।
প্রকৃতপক্ষে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা মানুষ, যিনি কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারেননি।
হাসিবুর রশীদ
লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট