১০:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইবির তৃণাবৃত বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ‘জুলাই উদ্যানে’ নামকরণ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০৩:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • / 36


২৪ এর জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ‘জুলাই উদ্যান-২০২৪’ নামে রূপান্তরিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। তবে সেই তৃণাবৃত উদ্যান নিয়ে শিক্ষার্থীদের হতাশার যেনো কমতি নেই। ৫ বছর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জলাবদ্ধতা এবং তৃণাবৃত হয়ে জঙ্গল হয়ে রয়েছে ইবির সেই বোটানিক্যাল গার্ডেন।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনকে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি স্বরূপ ‘জুলাই উদ্যান’ নামে নামকরণ করেন।

শিক্ষার্থীদের গবেষণা এবং ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট তৎকালীন প্রশাসনের উদ্যোগে ৬ বিঘা জমির উপর প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যায়ে ৮৫ প্রজাতি গাছ নিয়ে যাত্রা শুরু করে ইবির বোটানিক্যাল গার্ডেন। তবে প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫ বছর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও বোটানিক্যাল গার্ডেনটি তার আসল লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। অবহেলা, অযত্ন ও যথাযথ পরিচর্যার অভাব যে সুস্পষ্ট তা এর জঙ্গল আবৃত ভূমি আর চতুর্পাশের আবর্জনার স্তুপ দেখেই বুঝা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যানের বিশেষজ্ঞ ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোক্তার হোসেন। ইবির তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলিমুজ্জামান টুটুলের তথ্যমতে, গার্ডেনে মোট ১০০ প্রজাতির উদ্ভিদ থাকার কথা ছিলো। এর মধ্যে ২৩ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী, ১৭ প্রজাতির ফুল, ১৩ প্রজাতির ঔষধি এবং ৪ প্রজাতির ফল ও কাঠ জাতীয় গাছ ছিলো মূল পরিকল্পনায়।

1000157483publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ

তবে সরেজমিনে দেখা যায়, বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিভিন্ন জাতের ফলজ, বনজ, ঔষধি গাছের বদলে বর্তমানে জায়গা নিয়েছে ঘন জঙ্গল। অবশিষ্ট গাছগুলোও আগাছার জন্য বেড়ে উঠতে পারছেনা সঠিকভাবে। কেবল অবহেলা আর অযত্নের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পরিচর্যাহীন গাছগুলো। পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকা থেকে ময়লা আবর্জনা ফেলায় এটি রূপ নিয়েছে ভাগাড়ে। পানি নিস্কাশন ব্যবস্থাও বেশ অপরিকল্পিত। জায়গাটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই গার্ডেনের ভেতরে পানি জমে থাকে। তবুও যেন ভ্রূক্ষেপ নেই প্রশাসনের। এছাড়াও পার্শবর্তী আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের গার্ডেনের গাছপালা পুড়িয়ে সবজি চাষ করারও অভিযোগ রয়েছে।

1000157377publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ

এবিষয়ে রবিউল ইসলাম নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনকে জুলাই উদ্যান-২০২৪ নামকরণ করা হয়েছে এটি খুবই চমৎকার উদ্যোগ। তবে বর্তমান প্রশাসনের কাছে আমাদের চাওয়া থাকবে যেন জুলাই উদ্যানকে তার প্রকৃত চেহারা দেওয়া হয়। বর্তমানের এই জঙ্গলময় অবস্থা কোনোভাবেই আমরা দেখতে চাই না। আমরা চাই জুলাই উদ্যান হবে ইবির সৌন্দর্য্যের প্রতীক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রশাসনের প্রধান কর্তারা গার্ডেন নিয়ে তাদের মেগা পরিকল্পনার কথা বহুবার শুনালেও বাস্তবায়ন হয়নি অদ্যাবধি। এমনকি সাবেক এস্টেট প্রধান উপ-রেজিস্ট্রার মো: টিপু সুলতান স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন অপারগতার কথা। তিনি বলেছিলেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনের এতো ইতিহাস আছে যে ওখানে আমার হাত দিতেও ভয় লাগে।

জুলাই উদ্যান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে এস্টেট অফিসের প্রধান উপ-রেজিস্ট্রার মো: আলাউদ্দিন জানান, প্রকৌশল অফিস আর আমাদের দপ্তর মিলে যৌথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভিযান-সহ যাবতীয় পরিকল্পনা একসাথে করা হবে। একটা বাজেট হয়েছে। শনিবার থেকে কাজ শুরু করে দিব।

জুলাই উদ্যানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, জুলাই বিপ্লব না হলে আমরা মুক্তভাবে চলতে পারতাম না। তাই এই বিপ্লবের চেতনাকে আমাদের ধারণ ও লালন করতে হবে। আমরা চলে যাব কিন্তু এই উদ্যান অনন্তকাল স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্মৃতি হিসেবে মন মগজে গেঁথে থাকবে।

এসময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, পরিবহন প্রশাসক এয়াকুব আলী-সহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধান, অফিস প্রধানবৃন্দ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখার নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

নূর ই আলম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
০১৭৪০৮১০৭৭৯
৩০ অক্টোবর, ২০২৪।

শেয়ার করুন

ইবির তৃণাবৃত বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ‘জুলাই উদ্যানে’ নামকরণ

প্রকাশিত: ০৩:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪


২৪ এর জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনকে ‘জুলাই উদ্যান-২০২৪’ নামে রূপান্তরিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। তবে সেই তৃণাবৃত উদ্যান নিয়ে শিক্ষার্থীদের হতাশার যেনো কমতি নেই। ৫ বছর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জলাবদ্ধতা এবং তৃণাবৃত হয়ে জঙ্গল হয়ে রয়েছে ইবির সেই বোটানিক্যাল গার্ডেন।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনকে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি স্বরূপ ‘জুলাই উদ্যান’ নামে নামকরণ করেন।

শিক্ষার্থীদের গবেষণা এবং ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট তৎকালীন প্রশাসনের উদ্যোগে ৬ বিঘা জমির উপর প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যায়ে ৮৫ প্রজাতি গাছ নিয়ে যাত্রা শুরু করে ইবির বোটানিক্যাল গার্ডেন। তবে প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫ বছর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও বোটানিক্যাল গার্ডেনটি তার আসল লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। অবহেলা, অযত্ন ও যথাযথ পরিচর্যার অভাব যে সুস্পষ্ট তা এর জঙ্গল আবৃত ভূমি আর চতুর্পাশের আবর্জনার স্তুপ দেখেই বুঝা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যানের বিশেষজ্ঞ ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোক্তার হোসেন। ইবির তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলিমুজ্জামান টুটুলের তথ্যমতে, গার্ডেনে মোট ১০০ প্রজাতির উদ্ভিদ থাকার কথা ছিলো। এর মধ্যে ২৩ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী, ১৭ প্রজাতির ফুল, ১৩ প্রজাতির ঔষধি এবং ৪ প্রজাতির ফল ও কাঠ জাতীয় গাছ ছিলো মূল পরিকল্পনায়।

1000157483publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ

তবে সরেজমিনে দেখা যায়, বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিভিন্ন জাতের ফলজ, বনজ, ঔষধি গাছের বদলে বর্তমানে জায়গা নিয়েছে ঘন জঙ্গল। অবশিষ্ট গাছগুলোও আগাছার জন্য বেড়ে উঠতে পারছেনা সঠিকভাবে। কেবল অবহেলা আর অযত্নের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পরিচর্যাহীন গাছগুলো। পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকা থেকে ময়লা আবর্জনা ফেলায় এটি রূপ নিয়েছে ভাগাড়ে। পানি নিস্কাশন ব্যবস্থাও বেশ অপরিকল্পিত। জায়গাটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই গার্ডেনের ভেতরে পানি জমে থাকে। তবুও যেন ভ্রূক্ষেপ নেই প্রশাসনের। এছাড়াও পার্শবর্তী আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের গার্ডেনের গাছপালা পুড়িয়ে সবজি চাষ করারও অভিযোগ রয়েছে।

1000157377publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ

এবিষয়ে রবিউল ইসলাম নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনকে জুলাই উদ্যান-২০২৪ নামকরণ করা হয়েছে এটি খুবই চমৎকার উদ্যোগ। তবে বর্তমান প্রশাসনের কাছে আমাদের চাওয়া থাকবে যেন জুলাই উদ্যানকে তার প্রকৃত চেহারা দেওয়া হয়। বর্তমানের এই জঙ্গলময় অবস্থা কোনোভাবেই আমরা দেখতে চাই না। আমরা চাই জুলাই উদ্যান হবে ইবির সৌন্দর্য্যের প্রতীক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রশাসনের প্রধান কর্তারা গার্ডেন নিয়ে তাদের মেগা পরিকল্পনার কথা বহুবার শুনালেও বাস্তবায়ন হয়নি অদ্যাবধি। এমনকি সাবেক এস্টেট প্রধান উপ-রেজিস্ট্রার মো: টিপু সুলতান স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন অপারগতার কথা। তিনি বলেছিলেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনের এতো ইতিহাস আছে যে ওখানে আমার হাত দিতেও ভয় লাগে।

জুলাই উদ্যান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে এস্টেট অফিসের প্রধান উপ-রেজিস্ট্রার মো: আলাউদ্দিন জানান, প্রকৌশল অফিস আর আমাদের দপ্তর মিলে যৌথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভিযান-সহ যাবতীয় পরিকল্পনা একসাথে করা হবে। একটা বাজেট হয়েছে। শনিবার থেকে কাজ শুরু করে দিব।

জুলাই উদ্যানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, জুলাই বিপ্লব না হলে আমরা মুক্তভাবে চলতে পারতাম না। তাই এই বিপ্লবের চেতনাকে আমাদের ধারণ ও লালন করতে হবে। আমরা চলে যাব কিন্তু এই উদ্যান অনন্তকাল স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্মৃতি হিসেবে মন মগজে গেঁথে থাকবে।

এসময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, পরিবহন প্রশাসক এয়াকুব আলী-সহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধান, অফিস প্রধানবৃন্দ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখার নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

নূর ই আলম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
০১৭৪০৮১০৭৭৯
৩০ অক্টোবর, ২০২৪।