মুনতাসির মাহমুদ সিয়াম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সড়ক ও রেলপথ অবরোধের মতো নানা কর্মসূচি পালন করছে। যদিও এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে শুনানি থাকায় এ নিয়ে এতদিন কিছুটা ধীরগতিতে এগিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রাখায় আন্দোলনকারীরা এবার তাদের আন্দোলন তীব্রতর করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিলে বাধা দেন সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার কর্মীরা। কিন্তু তা অতিক্রম করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। সারাদিনের অবস্থান কর্মসূচিতে ক্লান্ত শরীরে হলে ফিরলে, অনেক শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগ করতে বলা হয়। কোটা বাতিল আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও সমন্বয়ক সারজিস আলমকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয় পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের বাঁধার মুখে সে চেষ্টা বিফলে যায়।

অপরদিকে শিক্ষার্থীদের এ চলমান আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে মনে করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি)। চলমান এ আন্দোলনে সংহতি জানাবে বিএনপি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আগামীকাল শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে দলটি। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিল ইস্যুতে দলের অবস্থান তুলে ধরবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কোটা বিরোধী আন্দোলন ইস্যু নিয়ে, জাতীয় স্থায়ী কমিটির জরুরি ভার্চুয়াল সভা ডাকে দলটি। সভায় কোটাবিরোধী আন্দোলন ও দলীয় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় দলের হাইকমান্ড। আগামী কালের সংবাদ সম্মেলনের পরে এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে। বৃহস্পতিবারের সভায় বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কোটা ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন মতামত দেন। সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও তার মন্তব্য তুলে ধরেন। দলটির বিবৃতি, ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছিল। এখন আবার আদালতকে ব্যবহার করে সেই কোটাব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছে। এটি স্পষ্টই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা। সুতরাং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রতারক বলেই বারবার জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করছে। কোটা কখনো মেধার বিকল্প হতে পারে না