খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ‘আদিবাসী ছাত্র কল্যাণ সংস্থা’র উদ্যোগে সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলা ডিসিপ্লিনের ‘নাটমণ্ডপে’ নবীন ও বিদায়ী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাত। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মত ও চিন্তার বৈচিত্র্য বিদ্যমান, আর এই বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি। এখানে সবাই আমরা একই পরিবারের অংশ। নিজ নিজ অবস্থান থেকে একাডেমিক উৎকর্ষ অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বিদেশে পড়ালেখার সময় আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র বাঙালি হিসেবে প্রায়ই বাংলাদেশিদের খুঁজতাম সেখান থেকেই শিখেছি, নিজের সংস্কৃতির শেকড়ের প্রতি ভালোবাসা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পার্বত্য চট্টগ্রাম, কাপ্তাই লেক, সুভলং ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে আদিবাসী সংস্কৃতির বৈচিত্র্য আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। যারা আজ গ্রাজুয়েশন শেষ করছেন, আপনারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় বহন করবেন, আপনাদের সুনামেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম। মানুষের জন্য কাজ করবেন, সভ্যতার জন্য কাজ করবেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল বাশার নাহিদ। তিনি বলেন, এই সংগঠনটি আমার পরিবারের মতো। তাদের মাধ্যমে আমি আদিবাসী সংস্কৃতি ও নানা বিষয়ে জেনেছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি একটি বৈচিত্র্যময় ক্যাম্পাস। আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি নিরাপদ পরিসর। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবিষ্যতে আরও সুযোগ-সুবিধা ও সহায়তা প্রদান করবে। আমরা সবাই বাংলাদেশি কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।
স্বাগত বক্তব্য দেন সীমান্ত চাকমা মিশু। নবীনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসিই ডিসিপ্লিনের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী প্রফেল খিশা এবং ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের একই সেশনের শিক্ষার্থী আনসিকা স্নিগ্ধা চিরান। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী উপেন্দ্র সেন চাকমা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি উইনুপ্রু চৌধুরী। সংগঠনের সঙ্গে তার পথচলার স্মৃতিচারণা করে তিনি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রূইপাইসং মারমা ও পুষ্পা চাকমা।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, যেখানে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, গান ও আবৃত্তির মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী এবং সুধীজন।
পাবলিকিয়ান টুডে/ এম | ফেসবুক