০৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জল্লাদ শাহজাহান ভুঁইয়া: “বাইরের জীবন এতো জটিল জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম”

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০৪:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪
  • / 37

জল্লাদ শাহজাহান ভুঁইয়া

শাহজাহান ভূঁইয়া, এক সময়ের আলোচিত জল্লাদ, যিনি ৪৪ বছরের কারাজীবনে ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছিলেন, তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ৬ আসামী, চার জন যুদ্ধ অপরাধী, বাংলা ভাই এবং এরশাদ সিকদার ছিলেন। এই কর্মের জন্য তিনি বহুবার আলোচনায় এসেছেন। বছরখানেক আগে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে বসবাস করছিলেন।

শাহজাহানের জীবন কখনোই সহজ ছিল না। রবিবার মধ্যরাতে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ভোর পাঁচটায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কথা জানানো হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।

শাহজাহান ছিলেন একজন দাগী আসামি এবং তার বিরুদ্ধে প্রায় তিন ডজন মামলা ছিল, যার মধ্যে অস্ত্র মামলা, ডাকাতি মামলা এবং বেশির ভাগই হত্যা মামলা ছিল। ১৯৯১ সালে প্রথমবার আটক হওয়ার পর, ১৯৯৫ সালে তাকে ১৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা পরে ৮৭ বছর মাফ করে ৫৬ বছর করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের রায়ে দণ্ড কমিয়ে ৪৩ বছরে নামিয়ে আনা হয়।

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও শাহজাহানের জীবন খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। তার ভাগ্নে অটোরিকশা কেনার টাকা আত্মসাৎ করে, চায়ের দোকানের কর্মচারী ৩০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়, এবং শেষে বিয়ে করেও সর্বস্বান্ত হন তিনি। এই সব চড়াই উৎরাই এর মধ্যে তিনি তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘কেমন ছিলো জল্লাদ জীবন’ লিখেছেন, যেখানে তার সমগ্র জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে।

শাহজাহান প্রায়ই বলতেন, “বাইরের জীবন এতো জটিল কেনো? জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম।” এই কথাটি তার জীবনযাত্রার জটিলতা ও কঠিন বাস্তবতার প্রমাণ বহন করে।

মুনতাসির মাহমুদ সিয়াম

শেয়ার করুন

জল্লাদ শাহজাহান ভুঁইয়া: “বাইরের জীবন এতো জটিল জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম”

প্রকাশিত: ০৪:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

শাহজাহান ভূঁইয়া, এক সময়ের আলোচিত জল্লাদ, যিনি ৪৪ বছরের কারাজীবনে ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছিলেন, তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ৬ আসামী, চার জন যুদ্ধ অপরাধী, বাংলা ভাই এবং এরশাদ সিকদার ছিলেন। এই কর্মের জন্য তিনি বহুবার আলোচনায় এসেছেন। বছরখানেক আগে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে বসবাস করছিলেন।

শাহজাহানের জীবন কখনোই সহজ ছিল না। রবিবার মধ্যরাতে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ভোর পাঁচটায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কথা জানানো হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।

শাহজাহান ছিলেন একজন দাগী আসামি এবং তার বিরুদ্ধে প্রায় তিন ডজন মামলা ছিল, যার মধ্যে অস্ত্র মামলা, ডাকাতি মামলা এবং বেশির ভাগই হত্যা মামলা ছিল। ১৯৯১ সালে প্রথমবার আটক হওয়ার পর, ১৯৯৫ সালে তাকে ১৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা পরে ৮৭ বছর মাফ করে ৫৬ বছর করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের রায়ে দণ্ড কমিয়ে ৪৩ বছরে নামিয়ে আনা হয়।

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও শাহজাহানের জীবন খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। তার ভাগ্নে অটোরিকশা কেনার টাকা আত্মসাৎ করে, চায়ের দোকানের কর্মচারী ৩০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়, এবং শেষে বিয়ে করেও সর্বস্বান্ত হন তিনি। এই সব চড়াই উৎরাই এর মধ্যে তিনি তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘কেমন ছিলো জল্লাদ জীবন’ লিখেছেন, যেখানে তার সমগ্র জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে।

শাহজাহান প্রায়ই বলতেন, “বাইরের জীবন এতো জটিল কেনো? জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম।” এই কথাটি তার জীবনযাত্রার জটিলতা ও কঠিন বাস্তবতার প্রমাণ বহন করে।

মুনতাসির মাহমুদ সিয়াম