জীবন্ত ম্যারাডোনা: মেসির জন্মদিন
- প্রকাশিত: ০৬:১০:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪
- / 63
আজ ২৪ শে জুন। ১৯৮৭ সালের এই দিনে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় ফুটবল বিশ্বের এক কিংবদন্তি।
এই ফুটবলার আর্জেন্টিনার রোজারিওতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসি ইস্পাতের কারখানায় কাজ করতেন এবং মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি ছিলেন একজন খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। মেসির পৈতৃক নিবাস ছিল ইতালির আকোনা শহরে। মেসির বড় দুই ভাই এবং এক ছোট বোন রয়েছে। বড় দুই ভাইয়ের নাম রদ্রিগো ও মাতিয়াস এবং ছোট বোনের নাম মারিয়া সল। স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে মেসি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ফুটবল খেলা শুরু করেন, যার কোচ ছিলেন ছিলেন পিতা হোর্হে।

মাত্র এগারো বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোনের (growth hormone) সমস্যা ধরা পড়ে। মেসি ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বার্সেলোনার যুব একাডেমির ইনফান্তিল বি, কাদেতে বি এবং কাদেতে এ দলে খেলেছেন। ২০০৪ সালের ১৬ অক্টোবর, এস্পানিওলের বিপক্ষে বার্সেলোনার তৃতীয় কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে মেসির লা লিগায় অভিষেক হয় (১৭ বছর এবং ১১৪ দিন বয়সে)। আর্জেন্টাইন-স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে ২০০৪ সালে মেসিকে স্পেনের জাতীয় অনূর্ধ্ব ২০ ফুটবল দলে খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু মেসি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ২০০৪ সালের জুনে, আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি খেলায় মাঠে নামেন। ২০০৫ ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশিপে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয় এবং তিনি ৬টি গোল করে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন বুটের পুরস্কার জিতেন। ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে খেলার জন্য বার্সেলোনা মেসিকে ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়। ১৪ জুন ২০২১-এ, ব্রাজিলে ২০২১ কোপা আমেরিকার আর্জেন্টিনার উদ্বোধনী গ্রুপ ম্যাচে চিলির বিপক্ষে ১-১ ড্রয়ে ফ্রি কিক থেকে গোল করেন মেসি। ২০২২ সালের ওয়েম্বলিতে ওয়েম্বলিতে কনমেবল-উয়েফা কাপ অফ চ্যাম্পিয়নদের তৃতীয় সংস্করণের ফাইনালেসিমাতে, মেসি ইতালির বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানে জয়ে দুবার সহায়তা করেছিলেন এবং আর্জেন্টিনার হয়ে দ্বিতীয় ট্রফি অর্জন করে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন। ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপে মেসি আর্জেন্টিনার উদ্বোধনী খেলায় পেনাল্টিতে গোল করেন, সৌদি আরবের কাছে ২-১ হারে, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে তাদের পরের ম্যাচে যেখানে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে জিতেছিল, মেসির ১ গোল আর এনজো ফার্নান্দেজের গোলে।

খেলার ধরন ও উচ্চতার কারণে মেসিকে ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনা করা হয়। কৌশলগতভাবে মেসি দলের আক্রমণভাগে খেলে থাকেন, তবে কখনও কখনও তিনি প্লেমেকারের দায়িত্বও পালন করেন। মেসি উইং বা মাঠের মাঝখান দিয়ে আক্রমণ করতে পছন্দ করেন। তিনি বাম-উইঙ্গার ও ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছিলেন।

2008 সাল থেকে, মেসি আন্তোনেলা রোকুজ্জো , রোজারিওর একজন সহকর্মীর সাথে সম্পর্কের মধ্যে রয়েছেন ।মেসি প্রথম জানুয়ারী 2009 সালে একটি সাক্ষাত্কারে তাদের রোমান্স নিশ্চিত করেন, এক মাস পরে বার্সেলোনা-এসপানিওল ডার্বির পরে সিটগেসে একটি কার্নিভালের সময় প্রকাশ্যে আসার আগে।মেসি ও রোকুজ্জোর তিন ছেলে। তার সঙ্গীর প্রথম গর্ভাবস্থা উদযাপন করার জন্য, মেসি 2 জুন 2012-এ ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার 4-0 ব্যবধানে জয়ে গোল করার পর তার শার্টের নীচে বল রেখেছিলেন, দুই সপ্তাহ পরে একটি সাক্ষাত্কারে গর্ভধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করার আগে।

২০০৭ সালে, মেসি প্রতিষ্ঠা করেন ‘‘লিও মেসি ফাউন্ডেশন’’। এই সংগঠনটি সুরক্ষিত নয় এমন শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখে। শৈশবে মেসিরও শারীরিক সমস্যা ছিল, তাই এই সংস্থা আর্জেন্টিনার রোগাক্রান্ত শিশুদের স্পেনে নিয়ে গিয়ে চিকিত্সার ব্যবস্থা করে এবং যাতায়াত, চিকিত্সা ও অন্যান্য ব্যয় বহন করে। ২০১০ সালের ১১ মার্চ, মেসিকে ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মেসি শুধু একজন ফুটবলার নন, তিনি একজন দানশীল ব্যক্তিত্বও বটে।

ছবি: আব্দুল্লাহ আল মুহাইমিন
লেখা: হাসিবুর রশী