বুধবার (১৩/১১/২০২৪ইং) ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর (ডুয়েট) এর শহিদ আহসান উল্লাহ্ মাস্টার অডিটোরিয়ামে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. জয়নাল আবেদিন , উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আরেফিন কাওসার এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. উৎপল কুমার দাসসহ অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ছাত্র- শিক্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর অন্যতম কিছু দাবি হলো:
১. সর্বশেষ সিন্ডিকেট অনুমোদিত অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল এবং যেসকল শিক্ষক এসবের সাথে জড়িত তাদের শাস্তি নিশ্চিতকরণ।

২. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাধা প্রদানকারী ঘাতক-দালালদের বিচারকার্যের বর্তমান অগ্রগতিসহ দ্রুত বিচারকার্য শেষ করা।

৩. প্রত্যেক হলে মানসম্মত খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

৪. ৩.৫ বছরের কোর্স ৩.৫ বছরেরই শেষ করা।

৫. ডুয়েট দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের হলের নাম, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান” এর পরিবর্তে “বিজয় ২৪” করা।

৬. ডুয়েটের ‘শহিদ মোস্তফা ক্যাফেটেরিয়া’তে কম মূল্যে মানসম্মত খাবার এর ব্যবস্থা করাসহ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা।

৭. ডুয়েটের সামনে উপজেলার জায়গাকে বর্তমান ক্যাম্পাস এর এক্সটেনশন করে ক্যাম্পাস এর পরিধি বৃদ্ধি করা।

৮. ডুয়েট দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু করাসহ দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে মসজিদ এর জায়গা নির্ধারণের ব্যবস্থা করা এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এর সম্প্রসারণ এর ব্যবস্থা করা।

৯. ‘শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ’ হলের সামনে বাম দিকের জায়গা পরিষ্কার করে সুইমিংপুল এর ব্যবস্থা করাসহ ভলিবল এর জন্য নির্ধারিত জায়গাকে ভলিবল খেলার উপযুক্ত করে দেওয়া।

১০. সামরিক বাহিনীতে আবেদন করতে সৃষ্ট জটিলতা দ্রুত সমাধান করা।

১১. বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকে ত্বরান্বিত করতে ফান্ড বৃদ্ধি করা এবং গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি করা।

১২. কেন্দ্রীয় সাইকেল গ্যারেজ অথবা প্রত্যেক হলের জন্য সাইকেল গ্যারেজের ব্যবস্থা করা।

১৩. ক্যাম্পাসের মধ্যে স্টুডেন্টদের নিরাপত্তা জোরদার করা।

১৪. লাইব্রেরীতে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর নাম বিলুপ্ত করে সেখানে আন্তর্জাতিক জার্নাল ও সাহিত্য বিষয়ক বই রাখা।

১৪. ডুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ‘শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ’ হলের রাস্তা পরিপূর্ণ ভাবে তৈরি করা।

১৫. হলের শারীরিক শিক্ষা ফি বিলুপ্ত করা ও হলের বিভিন্ন চার্জ কমানো।

১৫. হল বা ক্যাম্পাসকে সম্পূর্ণ মাদক ও ধূমপানমুক্ত করার ব্যবস্থা করা।

১৭. আন্ডারগ্রাজুয়েশনের সকল স্টুডেন্টদের হলে সিটের ব্যবস্থা করার পর ডুয়েটে এমএসসিরত শিক্ষার্থীদের হলে সিট এর ব্যবস্থা করা।

১৮. ডুয়েট মেডিকেলে ডেঙ্গু টেস্টসহ সমসাময়িক প্রয়োজনীয় সকল টেস্টের ব্যবস্থা করাসহ ডুয়েট মেডিকেলের চিকিৎসা সেবা উন্নত করা। চিকিৎকদের সঠিক দায়িত্ব পালনে অবহেলা নিয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

১৯. ডুয়েট মেডিকেলে আরো একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা।

কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স আছে। যা সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা- কর্মচারিদের সেবা দিয়ে থাকে। একজন রোগীকে নিয়ে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা গেলে ঐ মুহূর্তে অপর কেউ অসুস্থ হলে জরুরী মুহূর্তে সেবা দেওয়ার জন্য অন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্স থাকে না।

২০. ডেঙ্গু নিধনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রাখা।

২১. প্রত্যেক হলের বিগত আয়-ব্যয় হিসাব দেখানো এবং প্রতি মাসের হলের আয়-ব্যয় হলের নোটিশ বোর্ডে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

২২. লাইব্রেরির সকল বই ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী লাইব্রেরির ওয়েবসাইটে সংযুক্ত করা । যেন যেকোনো বই খুজে পেতে সহজ হয়। সর্বপরি লাইব্রেরী আধুনিকায়নসহ এসির ব্যবস্থা করা।

২৩. ডুয়েট সাংবাদিক সমিতিসহ যে সকল ক্লাব ডুয়েট কতৃক রেজিষ্ট্রেশন নাই প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ক্লাবগুলোকে রেজিষ্ট্রেশন ও ক্লাবগুলোকে রুম বরাদ্দ দেওয়া এবং বাৎসরিক বাজেটের অন্তর্ভুক্ত করা।

২৪. ডুয়েটে একটা শপিংমল করা যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার, মুদি বাজার, কনফেকশনারি, সেলুন, কফি হাউস, মুচি, ফলমূলের দোকান, শীতকালীন পিঠার দোকান, মোবাইল ব্যাংকিং সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই থাকবে।

এছাড়াও শিক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের ডিপার্টমেন্ট, কোর্স , ল্যাব ফ্যাসিলিটি বৃদ্ধি, ল্যাবের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করা এবং ক্লাস সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ দেয়।

সকল অভিযোগের প্রতিত্তরে ভিসি, প্রো-ভিসি এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালক বিভিন্ন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণসহ তাদের অবস্থান তুলে ধরেন শিক্ষার্থীদের সামনে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সকল দাবি বাস্তবায়ন করা হবে বলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কথা দেন।

একইসাথে উপাচার্য মহোদয় সকল কাজে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

হাসিবুর রশীদ
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, এলপিআই