দুটি হাত না থাকলেও পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ১৯২তম মানিক
- প্রকাশিত: ১০:৪৯:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 261
পা দিয়ে লিখে এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার পর এবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে মেধাতালিকায় ১৯২তম স্থান অর্জন করেছে মানিক রহমান।রোববার (১১ মে) দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হলে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মানিকের বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।মানিক রহমান ২০২২ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০২৪ সালে নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করে—উভয় পরীক্ষায়ই গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করে।
মানিকের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগমের বড় ছেলে। শুধু এসএসসি বা এইচএসসিতে নয়, পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে শুরু থেকেই নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছে মানিক।এছাড়াও পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটারে টাইপ করার কাজেও সে বেশ পারদর্শী। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের কারণে এবার সেই স্বপ্নের দ্বার উন্মোচিত হলো।মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তার দুটি হাত নেই, একটি পা অন্যটির চেয়ে ছোট। কিন্তু আমরা কখনোই তাকে প্রতিবন্ধী মনে করিনি। ছোটবেলা থেকেই তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। তার লেখা অত্যন্ত সুন্দর এবং সে পড়াশোনায় খুব মনোযোগী। আল্লাহর রহমত ও সবার দোয়ায় আজ তার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের পথে।’
মানিক রহমান বলেন, ‘আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত, বাবা-মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিইসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত প্রতিটি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এবার হাবিপ্রবির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় ১৯২তম স্থান অর্জন করেছি। সবাই দোয়া করবেন, আমি যেন একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।’