দেশের সকল নারী শিক্ষার্থীদের নিজের বোনদের মতোই দেখি : জাবিতে শিবির সভাপতি জাহিদ
- প্রকাশিত: ০৭:০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / 27
জাবি প্রতিনিধি
ছাত্র শিবিরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ৫৪ তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কুইজ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের মনে শিবির সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে সংগঠনটি ‘আস্ক শিবির, ‘নো শিবির’ নামের প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করেছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটরিয়ামের সেমিনার কক্ষে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিধি হিসেবে ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রিয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রিয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি মোঃ আবু সাদিক কায়েম এবং জাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি ও সাবেক কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও গবেষণা সম্পাদক এড. সাকিল উদ্দিন। অনুষ্ঠানটি জাবি শাখা শিবিরের সদস্য মাজহার ফাহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির ব্রত নিয়ে শিবির কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, ইসলামি ছাত্রশিবির ব্যক্তিগত স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে জাতীয় স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। এটি শুধু একটি ছাত্র সংগঠন না, এটি একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছাত্রশিবিরের কর্মী হতে চাইলে তাকে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমরনীতি, বিজ্ঞানসহ সকল ক্ষেত্রে অগাধ জ্ঞান রাখতে হয়। জাতীয় স্বার্থে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণে আমাদের অনেক ভাইকে জীবন দিতে হয়েছে। নৈতিকতার দিক থেকে শিবির অনন্য। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শিবির শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে । একজন যুবককে নীতি নৈতিকতা ও পরিপূর্ণ খাঁটি মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে শিবির বদ্ধ পরিকর। সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির ব্রত নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির কাজ করে যাচ্ছে।
জাবি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাকিল উদ্দিন বলেন, একটা সময় ছিলো জাবিতে অতিথি পাখি মারলে ৫০০ টাকা জরিমানা দেওয়া লাগতো। কিন্তু শিবিরকে মারলে পুরস্কৃত করা হত এই ক্যাম্পাসে। এই ক্যাম্পাসে এমনও মানুষ তৈরি হয়েছে যারা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে উদযাপন করেছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সারারাত ধরে নির্যাতন চালিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীকে হলের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। হত্যা, খুন, ধর্ষণ, হল দখল, সিট বানিজ্য এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল ছাত্র রাজনীতির নামে।
এসময় তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের আহ্বান করে বলেন, আপনারা যদি শিবিরের পতাকা তলে আসেন, আমরা কথা দিচ্ছি এসব অন্যায় অবিচার আর হবে না, আমাদের বোনেরা নিরাপত্তা পাবে, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকবে, সবাই সম্মান নিয়ে জান মালের নিরাপত্তা নিয়ে শিক্ষাকার্য পরিচালনা করবে এবং নিজেকে একজন সৎ, যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।
সমাপনী বক্তব্যে ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে জন সাধারণে বিভিন্ন ন্যারেটিভ চালু থাকলেও। ২৪-এর গণঅভ্যত্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান গোটা জাতি স্মরণ রাখবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যে জন সংখ্যা আছে আমরা যদি সেটাকে মানব সম্পদে রুপান্তর করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ হবে আধুনিক বিশ্বের রোল মডেল। ছাত্র শিবির সেই কাজই করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
এসময় তিনি দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, বৃটিশদের দেয়া শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল গোলাম তৈরির হাতিয়ার। কিন্তু আজও আমরা সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে যাচ্ছি। আজ পর্যন্ত আমরা যুগ, জাতির চাহিদা ও চিন্তার আলোকে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়ণ করতে পারি নাই। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যখন মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করছে, তখন আমরা হল দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছি। আমরা যখন একে অন্যের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব করবো তখনই আমরা সৎ ও যোগ্য হয়ে উঠবো।
….
জোবায়ের জাকির
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
২৩-০১-২৫