১১:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগে কথিত সাংবাদিককে গণধোলাই

মোঃ শাকিল শাহরিয়ার, গোবিপ্রবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: ১১:৪১:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • / 18

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

গোবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে এক কথিত সাংবাদিককে গণধোলাই দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীকে তাকে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করে।

শনিবার (২৮ জুন) বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, সাংবাদিক পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে নিয়ে নিউজ করার ভয় দেখিয়ে ওই ব্যক্তি অর্ধ লক্ষ টাকা দাবি করে।

ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে  গণপিটুনি দেয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এলে তাকে হেফাজতে নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অভিযোগকারী এএসভিএম বিভাগের শিক্ষার্থী বর্নি বলেন, “রাব্বি আমার কাছে অনৈতিকভাবে ৫০০০০ টাকা দাবি করে। আজকে দুপুরে আমি টাকাটা নিয়ে রাব্বিকে দিতে আসি। আমি টাকা দেওয়ার পূর্বেই হঠাৎ ছাত্ররা এসে হট্টগোল শুরু করে এবং এক পর্যায়ে তারা রাব্বিকে ধরে গণপিটুনি দেয়।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাব্বি জানায়, “গতকাল রাতে আমার বান্ধবী বর্নির সাথে কথা হয়। আজকে দুপুরে বর্নি আমাকে ম্যাসেজ দেয় এবং বলে গতকাল রাতে সে আমার কথা বলার পর থেকে ঘুমাতে পারেনি। এর আগে একবার একটা তথ্যের জন্য সে আমাকে ১০০০ টাকা দেয়।”

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাকে গতকাল রাতের কথপোকথনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে স্পষ্ট কোনো উত্তর দেয় নি।

অভিযুক্ত রাব্বি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে বর্নি ইতোপূর্বেও তাকে টাকা দিয়েছে।  

প্রসঙ্গত, এই রাব্বি এক সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হয়ে স্বাধীনতা দিবস হলে ত্রাস সৃষ্টি করলেও বর্তমানে ছাত্রদলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তার অপকর্মের কথা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, স্বাধীনতা দিবস হলে সে সিটে উঠতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে তাকে হল থেকে চলে যেতে বাধ্য করে। এছাড়া গত ৩০ এপ্রিল গুজব ও অপপ্রচার চালিয়ে গোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতিকে হত্যা চেষ্টা করার অভিযোগ আছে রাব্বির বিরুদ্ধে। গোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কে.এম. ইয়ামিনুল হাসান আলিফ বলেন, গত ৩০ এপ্রিল আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি আসার পথে হলে যাই। এ সময় আমি হলে শিক্ষার্থীদের মারতে গেছি,কমিটি খেয়ে দিতে চেয়েছি এমন বিভ্রান্তিকর পোস্ট সে ফেসবুকে প্রকাশ করলে কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থীরা আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয় এবং এখনো আমি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।

এ বিষয়ে গোবিপ্রবি ড. আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন, “আমি এই মুহুর্তে ক্যাম্পাসে নেই। আগামীকাল ক্যাম্পাসে ফিরে দুই পক্ষ নিয়ে বসে আমি সমস্যাটির সমাধান করার চেষ্টা করবো।”

এ রিপোর্ট লেখা অব্দি গণধোলাইয়ের শিকার শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগে কথিত সাংবাদিককে গণধোলাই

প্রকাশিত: ১১:৪১:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

গোবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে এক কথিত সাংবাদিককে গণধোলাই দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীকে তাকে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করে।

শনিবার (২৮ জুন) বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, সাংবাদিক পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে নিয়ে নিউজ করার ভয় দেখিয়ে ওই ব্যক্তি অর্ধ লক্ষ টাকা দাবি করে।

ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে  গণপিটুনি দেয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এলে তাকে হেফাজতে নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অভিযোগকারী এএসভিএম বিভাগের শিক্ষার্থী বর্নি বলেন, “রাব্বি আমার কাছে অনৈতিকভাবে ৫০০০০ টাকা দাবি করে। আজকে দুপুরে আমি টাকাটা নিয়ে রাব্বিকে দিতে আসি। আমি টাকা দেওয়ার পূর্বেই হঠাৎ ছাত্ররা এসে হট্টগোল শুরু করে এবং এক পর্যায়ে তারা রাব্বিকে ধরে গণপিটুনি দেয়।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাব্বি জানায়, “গতকাল রাতে আমার বান্ধবী বর্নির সাথে কথা হয়। আজকে দুপুরে বর্নি আমাকে ম্যাসেজ দেয় এবং বলে গতকাল রাতে সে আমার কথা বলার পর থেকে ঘুমাতে পারেনি। এর আগে একবার একটা তথ্যের জন্য সে আমাকে ১০০০ টাকা দেয়।”

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাকে গতকাল রাতের কথপোকথনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে স্পষ্ট কোনো উত্তর দেয় নি।

অভিযুক্ত রাব্বি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে বর্নি ইতোপূর্বেও তাকে টাকা দিয়েছে।  

প্রসঙ্গত, এই রাব্বি এক সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হয়ে স্বাধীনতা দিবস হলে ত্রাস সৃষ্টি করলেও বর্তমানে ছাত্রদলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তার অপকর্মের কথা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, স্বাধীনতা দিবস হলে সে সিটে উঠতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে তাকে হল থেকে চলে যেতে বাধ্য করে। এছাড়া গত ৩০ এপ্রিল গুজব ও অপপ্রচার চালিয়ে গোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতিকে হত্যা চেষ্টা করার অভিযোগ আছে রাব্বির বিরুদ্ধে। গোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কে.এম. ইয়ামিনুল হাসান আলিফ বলেন, গত ৩০ এপ্রিল আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি আসার পথে হলে যাই। এ সময় আমি হলে শিক্ষার্থীদের মারতে গেছি,কমিটি খেয়ে দিতে চেয়েছি এমন বিভ্রান্তিকর পোস্ট সে ফেসবুকে প্রকাশ করলে কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থীরা আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয় এবং এখনো আমি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।

এ বিষয়ে গোবিপ্রবি ড. আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন, “আমি এই মুহুর্তে ক্যাম্পাসে নেই। আগামীকাল ক্যাম্পাসে ফিরে দুই পক্ষ নিয়ে বসে আমি সমস্যাটির সমাধান করার চেষ্টা করবো।”

এ রিপোর্ট লেখা অব্দি গণধোলাইয়ের শিকার শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।