০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে ফের অনশনে জাবি শিক্ষার্থীরা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০৫:৪৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 28

জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় ‘অযৌক্তিক’ পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে ফের আমৃত্যু গণঅনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে এ গণঅনশনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

অনশনকারীরা হলেন- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসেন রাহাত, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম, ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বাংলা বিভাগের মুহাম্মাদ মাহাদী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের মুয়িদ মুহাম্মদ ফাহিম, অর্থনীতি বিভাগের নকিব আল মাহমুদ অর্ণব, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মালিহা নামলাহ।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসন্ন জাকসু নির্বাচন বানচাল করতে চায়। আগামী ৬ তারিখ জাকসুর তফসিল ঘোষণা করার কথা কিন্তু এই সময়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মতো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলন চলবে পাশাপাশি আমাদের জাকসু নির্বাচনও সময় মতো হতে হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে কাজগুলো করছে সেটাকে আমরা গণঅভ্যুত্থান বিরোধী কাজ হিসেবে গণ্য করবো এবং এই প্রশাসন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবো।’

অনশনকারী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা সকল প্রকার বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল চাই। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরা গণঅনশনে বসি। প্রায় ১৯ ঘন্টা অনশনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা আশ্বস্ত হই। তখন আমরা অনশন কর্মসূচি স্থগিত করি এবং প্রশাসনকে মিটিং করার সময় দেই। কিন্তু তারা যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, তা আমাদের অনশনের সাথে প্রহসন মূলক।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করেছি তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী আমরা সরাসরিভাবে এখানে কোনো কিছু ডিক্লেয়ার করতে পারি না।’

এর আগে, গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দিকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাতে দিকে অনশনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪ জনে। পরে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান আজ সোমবার দুপুরে তিনটায় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবেন এমন আশ্বাস দিলে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তারা অনশন স্থগিত করেন। এরপর সোমবার দুপুরে মিটিং শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং জানান তারা পোষ্যকোটার বিষয়ে একটি কমিটি করেছে এই কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। উপাচার্যের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা ফের অনশনে বসেছেন।

উল্লেখ্য, ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অধ্যাদেশ (সংশোধিত)-এর ধারা ১০-এর সংস্কার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানকে সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উক্ত কমিটিকে আগামী ১৫ (পনের) কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে।

…….

জোবায়ের জাকির
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 
০৩-০২-২৫

শেয়ার করুন

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে ফের অনশনে জাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় ‘অযৌক্তিক’ পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে ফের আমৃত্যু গণঅনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে এ গণঅনশনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

অনশনকারীরা হলেন- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসেন রাহাত, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম, ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বাংলা বিভাগের মুহাম্মাদ মাহাদী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের মুয়িদ মুহাম্মদ ফাহিম, অর্থনীতি বিভাগের নকিব আল মাহমুদ অর্ণব, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মালিহা নামলাহ।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসন্ন জাকসু নির্বাচন বানচাল করতে চায়। আগামী ৬ তারিখ জাকসুর তফসিল ঘোষণা করার কথা কিন্তু এই সময়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মতো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলন চলবে পাশাপাশি আমাদের জাকসু নির্বাচনও সময় মতো হতে হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে কাজগুলো করছে সেটাকে আমরা গণঅভ্যুত্থান বিরোধী কাজ হিসেবে গণ্য করবো এবং এই প্রশাসন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবো।’

অনশনকারী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা সকল প্রকার বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল চাই। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরা গণঅনশনে বসি। প্রায় ১৯ ঘন্টা অনশনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা আশ্বস্ত হই। তখন আমরা অনশন কর্মসূচি স্থগিত করি এবং প্রশাসনকে মিটিং করার সময় দেই। কিন্তু তারা যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, তা আমাদের অনশনের সাথে প্রহসন মূলক।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করেছি তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী আমরা সরাসরিভাবে এখানে কোনো কিছু ডিক্লেয়ার করতে পারি না।’

এর আগে, গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দিকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাতে দিকে অনশনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪ জনে। পরে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান আজ সোমবার দুপুরে তিনটায় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবেন এমন আশ্বাস দিলে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তারা অনশন স্থগিত করেন। এরপর সোমবার দুপুরে মিটিং শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং জানান তারা পোষ্যকোটার বিষয়ে একটি কমিটি করেছে এই কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। উপাচার্যের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা ফের অনশনে বসেছেন।

উল্লেখ্য, ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অধ্যাদেশ (সংশোধিত)-এর ধারা ১০-এর সংস্কার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানকে সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উক্ত কমিটিকে আগামী ১৫ (পনের) কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে।

…….

জোবায়ের জাকির
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 
০৩-০২-২৫