১১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ববিতে ট্রেজারারের কাজে যোগদানের পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ তছরুপের চেষ্টার অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ১১:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 36

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজে যোগদানে পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ তছরুপের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ 

জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর বুধবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ট্রেজারার হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান নিয়োগ পান৷ তবে বিতর্কিত,দুর্নীতিগ্রস্থ ও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসাবে কাজ করার অভিযোগ এনে ২৬ নভেম্বর রাত ৮ টার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে যোগদানে বাধা দেন৷

পরবর্তীতে বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারকে ক্যাম্পাস প্রবেশের সব গেটে তালাবদ্ধ করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে৷ এরই ধারাবাহিকতায় ববির ১২৭ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত ট্রেজারারের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদলিপি প্রদান করেন এবং  ফ্যাসিস্টের দোসরদের নিয়োগের বিরুদ্ধে কর্মচারীরা ঐ দিন বিকাল তিনটায় গ্রাউন্ড ফ্লোরে মানববন্ধন  করেন।

এদিকে বুধবারও (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান না করলেও ট্রেজারার আবু হেনা রনি মোস্তাফা কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অর্থ তার নামে একাউন্ট করে ট্রান্সফার করতে হবে বলে সোনালী ব্যাংকের ববি শাখার ম্যানেজার ড. দিপু রাণী ভৌমিককে চাপ প্রয়োগ করেন৷ দিপু রাণী ভৌমিক প্রাথমিকভাবে এসব বিষয়ে রাজি না হওয়ায় তিনি বরিশালের সোনালী ব্যাংকের ডিএজমসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ববি শাখার ম্যানেজারকে অর্থের বিষয়টি নিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন৷

এসব বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ববি শাখার ম্যানেজার দিপু রাণী ভৌমিক বলেন, বুধবার রাতে কর্পোরেট শাখার ডিজিএম (কর্পোরেট) এর সঙ্গে প্রথমে ট্রেজারার আবু হেনা আলোচনা করলে কর্পোরেট শাখা থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় যোগাযোগ করতে বলে৷ তখন বুধবার রাতে পৌনে ৭ টায়, তিনি আমাকে ফোন দিয়ে ভার্সিটির একটা একাউন্ট করতে চান এবং ভিসির স্বাক্ষর পরিবর্তন করে আমার স্বাক্ষর যুক্ত করে করতে হবে এবং আজকে মধ্যে করার সম্ভব কি না জানতে চান।

অফিস টাইম এবং নিয়ম বর্হিভূত এ কাজ করতে অস্বীকার করলে আমাকে ক্যাম্পাসের বাহিরে দেখা করার জন্যও চাপ প্রয়োগ করেন তিনি৷ আমি রাজি না হওয়ায় তিনি ডিজিএমদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেন৷ 

তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-অনুযায়ী উপাচার্য  অর্থ সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে উপাচার্য যে কাউকে দায়িত্ব দিতে পারেন তবে সেটি সিন্ডিকেটের অনুমতি সাপেক্ষে ও রেজুলেশন বইয়ে উপাচার্যের লিখিত স্বাক্ষর ব্যাতীত বিষয়টি বৈধ নয়৷  ট্রেজারার (আবু হেনা মোস্তফা কামাল) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের একাউন্টের একসেস নিতে চাচ্ছেন বলে মনে হয়েছে আমার৷ 

এবিষয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাকিব আহমেদ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সময়ে দুর্নীতিগ্রস্থ এক কর্মকর্তা যার নামে অনেক অভিযোগ, সে ট্রেজারার হিসাবে যোগদানের আগে অর্থের একসেস নিতে চায়, এটা নিয়ে শঙ্কিত এজন্য তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি৷ তাকে যোগদানের সহয়তা করার জন্য উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দীন বলেন, বিতর্কিত ট্রেজারারের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের প্রতিবাদলিপি শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রালয়ে পাঠিয়েছি৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বেআইনিভাবে ট্রেজারারকে এখন পর্যন্ত গাড়ি ব্যবহার করতে দিচ্ছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড তার হাতে তুলে দেওয়া কতটা যৌক্তিক?? তাকে অপসারণ করা না পর্যন্ত আমাদের শিক্ষকদের কঠোর আন্দোলন চলবে৷

1000169666publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এ ধরনের কর্মকর্তা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের দায়িত্ব গ্রহণ করে তাহলে অচিরেই এ বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হয়ে যাবে৷

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এবিষয়টি সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার অবগত করলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন দেখিয়েছি৷ আইন অনুযায়ী এটা ট্রেজারার করতে পারেননা৷

সোনালী ব্যাংকের বরিশাল অফিসের ডিজিএম শাহ আলম বলেন, “ট্রেজারার আমাদের কাছে এসেছিল আমাদের ম্যাসেজ তাকে পাঠিয়ে দিয়েছি যে,  এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বিষয় সুতরাং আমাদের সাথে এ বিষয়ে কোন আলাপ নেই৷”

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “আমাকে উপর থেকে নিষেধ করা হয়েছে কারও সঙ্গে কথা না বলতে৷ আমি খুবই দুঃখিত ,এই মুহুর্তে আমি কোন কথা বলবো না৷”

সার্বিক বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, আমি কাজের মধ্যে আছি। এবিষয়ে গতকালকে আমি সব বলে দিয়েছি, এ নিয়ে এখন কোন মন্তব্য করতে চাই না৷

শেয়ার করুন

ববিতে ট্রেজারারের কাজে যোগদানের পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ তছরুপের চেষ্টার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজে যোগদানে পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ তছরুপের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ 

জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর বুধবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ট্রেজারার হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান নিয়োগ পান৷ তবে বিতর্কিত,দুর্নীতিগ্রস্থ ও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসাবে কাজ করার অভিযোগ এনে ২৬ নভেম্বর রাত ৮ টার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে যোগদানে বাধা দেন৷

পরবর্তীতে বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারকে ক্যাম্পাস প্রবেশের সব গেটে তালাবদ্ধ করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে৷ এরই ধারাবাহিকতায় ববির ১২৭ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত ট্রেজারারের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদলিপি প্রদান করেন এবং  ফ্যাসিস্টের দোসরদের নিয়োগের বিরুদ্ধে কর্মচারীরা ঐ দিন বিকাল তিনটায় গ্রাউন্ড ফ্লোরে মানববন্ধন  করেন।

এদিকে বুধবারও (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান না করলেও ট্রেজারার আবু হেনা রনি মোস্তাফা কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অর্থ তার নামে একাউন্ট করে ট্রান্সফার করতে হবে বলে সোনালী ব্যাংকের ববি শাখার ম্যানেজার ড. দিপু রাণী ভৌমিককে চাপ প্রয়োগ করেন৷ দিপু রাণী ভৌমিক প্রাথমিকভাবে এসব বিষয়ে রাজি না হওয়ায় তিনি বরিশালের সোনালী ব্যাংকের ডিএজমসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ববি শাখার ম্যানেজারকে অর্থের বিষয়টি নিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন৷

এসব বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ববি শাখার ম্যানেজার দিপু রাণী ভৌমিক বলেন, বুধবার রাতে কর্পোরেট শাখার ডিজিএম (কর্পোরেট) এর সঙ্গে প্রথমে ট্রেজারার আবু হেনা আলোচনা করলে কর্পোরেট শাখা থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় যোগাযোগ করতে বলে৷ তখন বুধবার রাতে পৌনে ৭ টায়, তিনি আমাকে ফোন দিয়ে ভার্সিটির একটা একাউন্ট করতে চান এবং ভিসির স্বাক্ষর পরিবর্তন করে আমার স্বাক্ষর যুক্ত করে করতে হবে এবং আজকে মধ্যে করার সম্ভব কি না জানতে চান।

অফিস টাইম এবং নিয়ম বর্হিভূত এ কাজ করতে অস্বীকার করলে আমাকে ক্যাম্পাসের বাহিরে দেখা করার জন্যও চাপ প্রয়োগ করেন তিনি৷ আমি রাজি না হওয়ায় তিনি ডিজিএমদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেন৷ 

তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-অনুযায়ী উপাচার্য  অর্থ সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে উপাচার্য যে কাউকে দায়িত্ব দিতে পারেন তবে সেটি সিন্ডিকেটের অনুমতি সাপেক্ষে ও রেজুলেশন বইয়ে উপাচার্যের লিখিত স্বাক্ষর ব্যাতীত বিষয়টি বৈধ নয়৷  ট্রেজারার (আবু হেনা মোস্তফা কামাল) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের একাউন্টের একসেস নিতে চাচ্ছেন বলে মনে হয়েছে আমার৷ 

এবিষয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাকিব আহমেদ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সময়ে দুর্নীতিগ্রস্থ এক কর্মকর্তা যার নামে অনেক অভিযোগ, সে ট্রেজারার হিসাবে যোগদানের আগে অর্থের একসেস নিতে চায়, এটা নিয়ে শঙ্কিত এজন্য তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি৷ তাকে যোগদানের সহয়তা করার জন্য উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দীন বলেন, বিতর্কিত ট্রেজারারের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের প্রতিবাদলিপি শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রালয়ে পাঠিয়েছি৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বেআইনিভাবে ট্রেজারারকে এখন পর্যন্ত গাড়ি ব্যবহার করতে দিচ্ছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড তার হাতে তুলে দেওয়া কতটা যৌক্তিক?? তাকে অপসারণ করা না পর্যন্ত আমাদের শিক্ষকদের কঠোর আন্দোলন চলবে৷

1000169666publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এ ধরনের কর্মকর্তা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের দায়িত্ব গ্রহণ করে তাহলে অচিরেই এ বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হয়ে যাবে৷

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এবিষয়টি সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার অবগত করলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন দেখিয়েছি৷ আইন অনুযায়ী এটা ট্রেজারার করতে পারেননা৷

সোনালী ব্যাংকের বরিশাল অফিসের ডিজিএম শাহ আলম বলেন, “ট্রেজারার আমাদের কাছে এসেছিল আমাদের ম্যাসেজ তাকে পাঠিয়ে দিয়েছি যে,  এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বিষয় সুতরাং আমাদের সাথে এ বিষয়ে কোন আলাপ নেই৷”

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “আমাকে উপর থেকে নিষেধ করা হয়েছে কারও সঙ্গে কথা না বলতে৷ আমি খুবই দুঃখিত ,এই মুহুর্তে আমি কোন কথা বলবো না৷”

সার্বিক বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, আমি কাজের মধ্যে আছি। এবিষয়ে গতকালকে আমি সব বলে দিয়েছি, এ নিয়ে এখন কোন মন্তব্য করতে চাই না৷