০৬:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ববির বিভিন্ন কমিটির পদে ড.কলিমুল্লাহ, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০২:২৫:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / 25

ববি প্রতিনিধি:

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ও শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পূর্বতন চাকরিকাল গণনা কমিটির আহ্বায়ক করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শারমিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে দেখা যায়, গত ৭ নভেম্বর গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের পূর্বতন চাকরিকাল গণনার পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এর আগে ১৪ অক্টোবর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য মনোনয়োন করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বেরোবির সাবেক এই উপাচার্যের সাথে সখ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে আসীন করা হয়েছে। এছাড়াও তার পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।

জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিরূদ্ধে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বৃহৎ সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ দুর্নীতির ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। যেখানে নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগে উঠে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শুচিতা শারমিন সেখানে ৪টি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে ছিলেন ।

যোগদানের দুই মাস পার হতে না হতেই উপাচার্যের এ কাজকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

রবিবার ( ১৭ নভেম্বর ) সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে ববির সকল পদ ও কর্মকাণ্ড থেকে অনতিবিলম্বে অব্যহতি ও ক্যাম্পাসে অবস্থানের অনুমতি না দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রক্টরের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি আবেদন দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর ড. রাহাত হোসেন ফয়সাল।

এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল মোল্লা বলেন, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা এক হয়ে লড়াই করতে বদ্ধপরিকর। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে সর্বাত্মকভাবে বয়কট করায় কোনোভাবেই ববিতে তার উপস্থিতি মেনে নেওয়া হবে না।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, কলিমুল্লাহ বিগত সময়ের বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ বিতর্কিত মানুষ। একজন উপাচার্য হিসেবে তার চেয়ে বিতর্কিত অন্যরা প্রতিযোগিতায় চেষ্ঠা করেও পারেনি। এমন বিতর্কিত একজন মানুষকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখে আমরা বিষ্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। তা যদি না আসে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার প্রশ্নে যৌথভাবে আবার প্রতিবাদে এগিয়ে আসবে ।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, উপাচার্য যাকে দিয়ে কমিটি করলে ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করেন তাকেই তিনি দিতে পারেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. শুচিতা শারমিনকে কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের মাধ্যমে যোগাযাগ করার চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন

ববির বিভিন্ন কমিটির পদে ড.কলিমুল্লাহ, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ০২:২৫:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

ববি প্রতিনিধি:

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ও শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পূর্বতন চাকরিকাল গণনা কমিটির আহ্বায়ক করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শারমিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে দেখা যায়, গত ৭ নভেম্বর গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের পূর্বতন চাকরিকাল গণনার পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এর আগে ১৪ অক্টোবর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য মনোনয়োন করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বেরোবির সাবেক এই উপাচার্যের সাথে সখ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে আসীন করা হয়েছে। এছাড়াও তার পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।

জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিরূদ্ধে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বৃহৎ সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ দুর্নীতির ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। যেখানে নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগে উঠে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শুচিতা শারমিন সেখানে ৪টি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে ছিলেন ।

যোগদানের দুই মাস পার হতে না হতেই উপাচার্যের এ কাজকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

রবিবার ( ১৭ নভেম্বর ) সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে ববির সকল পদ ও কর্মকাণ্ড থেকে অনতিবিলম্বে অব্যহতি ও ক্যাম্পাসে অবস্থানের অনুমতি না দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রক্টরের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি আবেদন দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর ড. রাহাত হোসেন ফয়সাল।

এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল মোল্লা বলেন, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা এক হয়ে লড়াই করতে বদ্ধপরিকর। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে সর্বাত্মকভাবে বয়কট করায় কোনোভাবেই ববিতে তার উপস্থিতি মেনে নেওয়া হবে না।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, কলিমুল্লাহ বিগত সময়ের বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ বিতর্কিত মানুষ। একজন উপাচার্য হিসেবে তার চেয়ে বিতর্কিত অন্যরা প্রতিযোগিতায় চেষ্ঠা করেও পারেনি। এমন বিতর্কিত একজন মানুষকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখে আমরা বিষ্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। তা যদি না আসে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার প্রশ্নে যৌথভাবে আবার প্রতিবাদে এগিয়ে আসবে ।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, উপাচার্য যাকে দিয়ে কমিটি করলে ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করেন তাকেই তিনি দিতে পারেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. শুচিতা শারমিনকে কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের মাধ্যমে যোগাযাগ করার চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।