০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেয়াদ শেষেও ববি রেজিস্ট্রারকে স্বপদে বহাল রাখার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০৪:৪০:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 36

ববি প্রতিনিধি 

নিজের স্বার্থে স্বেচ্ছাচারিভাবে নিয়মের তোয়াক্কা না করে মেয়াদ শেষেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে স্বপদে বহাল রাখার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ৮৭ তম সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমন খবর জানতে পেরে সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেট স্থগিতসহ আরও ৫টি দাবি জানিয়ে গতকাল বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয় তালাবদ্ধ করেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি ছিলো রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের মুক্ত করা। কিন্তু উপাচার্য উল্টো দোসরদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বারংবার পুর্নবাসন করছেন এমনটা অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। 

জানা যায়, রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে এক অফিস আদেশ জারি করে রেজিস্ট্রারকে স্বপদে পুনর্বহাল রেখেছেন। উপাচার্যের একান্ত সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নির্বাহী আদেশে রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষেও পিআরএল বাতিল করে তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এতে করে মেয়াদ শেষেও বহাল তবিয়তে সরকারি সুযোগ সুবিধায় ভোগ করছেন ও অফিস করছেন মনিরুল ইসলাম । 

উপাচার্য তার হাতের পুতুল করে রাখতেই রেজিস্ট্রারকে এমনভাবে স্বপদে বহাল রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কয়েকজন শিক্ষক।

উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে দিয়ে ইচ্ছামত নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষক কর্মকর্তাদের হুমকি।আর ভয়ভীতি দেখিয়ে একের পর এক প্রজ্ঞাপন জারি করাচ্ছেন। ননির পুতুলের মতো রেজিস্ট্রার উপাচার্যকে খুশি রাখতে সেইসব চিঠি ও অফিস আদেশ জারি করছেন বলে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বড় একটি অংশ অভিযোগ করছেন। মেয়াদ শেষেও এমন চিঠি ও অফিস আদেশে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তীতে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ। 

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মামুন অর রশিদ বলেন, রেজিস্ট্রার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অবসরে গেছেন। কিন্তু এখনো তিনি রেজিস্ট্রারের সকল দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা আগের মতোই ভোগ করছেন।

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে, মনিরুল ইসলামকে আবার রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনের আদেশ দিতেই পারেন। কিন্তু সেই আদেশের অনুলিপি প্রশাসনে পাঠাতে হবে। কিন্তু রেজিস্ট্রারের নিয়োগ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোন অফিস আদেশ পাইনি। তাই কিভাবে এখনো তিনি রেজিস্ট্রার পদে বহাল রয়েছেন, তা আমি অবগত নই।

অবসরে গ্রহনের কথা স্বীকার করে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম  বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন আমার পিআরএল স্থগিত করে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন৷ সেই আদেশ নিয়েই রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছি। সিন্ডিকেটের সভায় অনুমোদন পেলেই সকলকে অফিস আদেশ দেওয়া হবে বলে জানান মনিরুল।

সিন্ডিকেটের সভায় রেজিস্ট্রারের নিয়োগ যদি বাতিল হয়, সে ক্ষেত্রে তার স্বাক্ষরিত সকল আদেশই বাতিল হয়ে যাবে। তখন এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন উপাচার্য সেক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টির সুযোগ নেই।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম রাব্বানি বলেন, অবসরে যাওয়া মনিরুল ইসলামকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন অফিস আদেশ জারি করিয়ে নিচ্ছেন উপাচার্য। উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে নিজের মতো ব্যবহার করতেই তাঁর মেয়াদ শেষেও স্বপদে বহাল রেখেছেন।

এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।

শেয়ার করুন

মেয়াদ শেষেও ববি রেজিস্ট্রারকে স্বপদে বহাল রাখার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ০৪:৪০:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ববি প্রতিনিধি 

নিজের স্বার্থে স্বেচ্ছাচারিভাবে নিয়মের তোয়াক্কা না করে মেয়াদ শেষেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে স্বপদে বহাল রাখার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ৮৭ তম সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমন খবর জানতে পেরে সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেট স্থগিতসহ আরও ৫টি দাবি জানিয়ে গতকাল বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয় তালাবদ্ধ করেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি ছিলো রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের মুক্ত করা। কিন্তু উপাচার্য উল্টো দোসরদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বারংবার পুর্নবাসন করছেন এমনটা অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। 

জানা যায়, রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে এক অফিস আদেশ জারি করে রেজিস্ট্রারকে স্বপদে পুনর্বহাল রেখেছেন। উপাচার্যের একান্ত সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নির্বাহী আদেশে রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষেও পিআরএল বাতিল করে তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এতে করে মেয়াদ শেষেও বহাল তবিয়তে সরকারি সুযোগ সুবিধায় ভোগ করছেন ও অফিস করছেন মনিরুল ইসলাম । 

উপাচার্য তার হাতের পুতুল করে রাখতেই রেজিস্ট্রারকে এমনভাবে স্বপদে বহাল রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কয়েকজন শিক্ষক।

উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে দিয়ে ইচ্ছামত নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষক কর্মকর্তাদের হুমকি।আর ভয়ভীতি দেখিয়ে একের পর এক প্রজ্ঞাপন জারি করাচ্ছেন। ননির পুতুলের মতো রেজিস্ট্রার উপাচার্যকে খুশি রাখতে সেইসব চিঠি ও অফিস আদেশ জারি করছেন বলে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বড় একটি অংশ অভিযোগ করছেন। মেয়াদ শেষেও এমন চিঠি ও অফিস আদেশে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তীতে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ। 

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মামুন অর রশিদ বলেন, রেজিস্ট্রার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অবসরে গেছেন। কিন্তু এখনো তিনি রেজিস্ট্রারের সকল দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা আগের মতোই ভোগ করছেন।

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে, মনিরুল ইসলামকে আবার রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনের আদেশ দিতেই পারেন। কিন্তু সেই আদেশের অনুলিপি প্রশাসনে পাঠাতে হবে। কিন্তু রেজিস্ট্রারের নিয়োগ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোন অফিস আদেশ পাইনি। তাই কিভাবে এখনো তিনি রেজিস্ট্রার পদে বহাল রয়েছেন, তা আমি অবগত নই।

অবসরে গ্রহনের কথা স্বীকার করে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম  বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন আমার পিআরএল স্থগিত করে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন৷ সেই আদেশ নিয়েই রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছি। সিন্ডিকেটের সভায় অনুমোদন পেলেই সকলকে অফিস আদেশ দেওয়া হবে বলে জানান মনিরুল।

সিন্ডিকেটের সভায় রেজিস্ট্রারের নিয়োগ যদি বাতিল হয়, সে ক্ষেত্রে তার স্বাক্ষরিত সকল আদেশই বাতিল হয়ে যাবে। তখন এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন উপাচার্য সেক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টির সুযোগ নেই।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম রাব্বানি বলেন, অবসরে যাওয়া মনিরুল ইসলামকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন অফিস আদেশ জারি করিয়ে নিচ্ছেন উপাচার্য। উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে নিজের মতো ব্যবহার করতেই তাঁর মেয়াদ শেষেও স্বপদে বহাল রেখেছেন।

এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।