০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেকৃবির সিরাজুদ্দৌলা হল ক্যান্টিনে বাকি ১২ লাখ টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০১:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
  • / 27

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বাব সিরাজুদ্দৌলা হলের ক্যান্টিনে ১২ লাখ টাকা বাকি পড়েছে। যাদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। 

পাওনা টাকার তালিকা বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ৪০৯ নম্বর রুমের শিক্ষার্থী অনিক হাসান দুর্জয়ের কাছে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। তিনি শেকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির যুগ্ম সাধারণ ছিলেন। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে ২২৭ নম্বর রুমের ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক  এ কে এম তমাল আব্দুল্লাহর কাছে। ২০১ নম্বর রুমের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিদোয়ানের কাছে ৫৬ হাজার ৮০০ টাকা, ৪০৭ নম্বর রুমের রমজান আলীর কাছে ৩৬ হাজার টাকা, উপ-মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শেরেবাংলা হলের হৃদয় হাসান রাসেলের কাছে ৩৩ হাজার টাকা, তিনি এখন দেশের বাহিরে আছেন। ৬০৮ নম্বর রুমের দপ্তর বিষয়ক উপ সম্পাদক জেনিথ খানের কাছে পাওনা রয়েছে ২১ হাজার ২৭৫ টাকা। এছাড়াও টাকা পাওনা রয়েছে আরও অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর কাছে।

সম্প্রতি নবাব সিরাজুদ্দৌলা হলের শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের খাবার মান উন্নত করার জন্য একাধিকবার মিটিং করে এবং ম্যানেজারের কাছে বকেয়া লিস্ট চায়। শুরুতে গড়িমসি করলেও শিক্ষার্থীদের

চাপের মুখে বকেয়া তালিকা প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।

তালিকা পেয়ে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডি হলে অবস্থানরত অভিযুক্ত একাধিক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় অভিযুক্তরা অনতিবিলম্বে টাকা পরিশোধের কথা জানান। 

জানা যায়, বকেয়া অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে মাসের পর মাস খাবার রুমে নিত। কারও ভাই, কারও বন্ধু এদরেকে অবৈধভাবে হলে রেখে ক্যান্টিন থেকে খাবার খাওয়াতো। টাকা চাইলে ক্যান্টিন থেকে ম্যানেজারকে বের করে দেওয়া হুমকি দিত।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, এতদিন ধরে ছাত্রলীগের নামে জুলুম করেছে এরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হক নষ্ট করা হয়েছে। ছাত্র হয়ে এরকম ঘৃণ্য কাজ ভবিষ্যতে আর কেউ যাতে না করে সেজন্য এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

নবাব সিরাজুদ্দৌলার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফিরোজ মাহমুদ বলেন, আমরা তালিকা পেয়েছি, অভিযুক্ত যাদের হলে পেয়েছি তাদের নিয়ে বসছি। সর্বোচ্চ বাকি খাওয়া শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট ও অন্য ডকুমেন্টস জমা রাখা হয়েছে। টাকা পরিশোধ করে নিয়ে যাবে। অন্য যারা হলে নেই তাদেরকেও টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিচ্ছি। অন্যথায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের ক্লিয়ারেন্স আটকে দিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবুল বাশার বলেন, আমরা শীঘ্রই সব হলের বিষয়ে অফিসিয়াল নোটিশ দিব। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যান্টিন, ডাইনিং এ কোনো জুলুম চলবে না। শিক্ষার্থীদের জন্য হলের নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা কাজ করছি।

শাহরিয়ার ইমন
শেকৃবি

শেয়ার করুন

শেকৃবির সিরাজুদ্দৌলা হল ক্যান্টিনে বাকি ১২ লাখ টাকা

প্রকাশিত: ০১:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বাব সিরাজুদ্দৌলা হলের ক্যান্টিনে ১২ লাখ টাকা বাকি পড়েছে। যাদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। 

পাওনা টাকার তালিকা বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ৪০৯ নম্বর রুমের শিক্ষার্থী অনিক হাসান দুর্জয়ের কাছে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। তিনি শেকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির যুগ্ম সাধারণ ছিলেন। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে ২২৭ নম্বর রুমের ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক  এ কে এম তমাল আব্দুল্লাহর কাছে। ২০১ নম্বর রুমের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিদোয়ানের কাছে ৫৬ হাজার ৮০০ টাকা, ৪০৭ নম্বর রুমের রমজান আলীর কাছে ৩৬ হাজার টাকা, উপ-মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শেরেবাংলা হলের হৃদয় হাসান রাসেলের কাছে ৩৩ হাজার টাকা, তিনি এখন দেশের বাহিরে আছেন। ৬০৮ নম্বর রুমের দপ্তর বিষয়ক উপ সম্পাদক জেনিথ খানের কাছে পাওনা রয়েছে ২১ হাজার ২৭৫ টাকা। এছাড়াও টাকা পাওনা রয়েছে আরও অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর কাছে।

সম্প্রতি নবাব সিরাজুদ্দৌলা হলের শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের খাবার মান উন্নত করার জন্য একাধিকবার মিটিং করে এবং ম্যানেজারের কাছে বকেয়া লিস্ট চায়। শুরুতে গড়িমসি করলেও শিক্ষার্থীদের

চাপের মুখে বকেয়া তালিকা প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।

তালিকা পেয়ে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডি হলে অবস্থানরত অভিযুক্ত একাধিক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় অভিযুক্তরা অনতিবিলম্বে টাকা পরিশোধের কথা জানান। 

জানা যায়, বকেয়া অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে মাসের পর মাস খাবার রুমে নিত। কারও ভাই, কারও বন্ধু এদরেকে অবৈধভাবে হলে রেখে ক্যান্টিন থেকে খাবার খাওয়াতো। টাকা চাইলে ক্যান্টিন থেকে ম্যানেজারকে বের করে দেওয়া হুমকি দিত।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, এতদিন ধরে ছাত্রলীগের নামে জুলুম করেছে এরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হক নষ্ট করা হয়েছে। ছাত্র হয়ে এরকম ঘৃণ্য কাজ ভবিষ্যতে আর কেউ যাতে না করে সেজন্য এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

নবাব সিরাজুদ্দৌলার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফিরোজ মাহমুদ বলেন, আমরা তালিকা পেয়েছি, অভিযুক্ত যাদের হলে পেয়েছি তাদের নিয়ে বসছি। সর্বোচ্চ বাকি খাওয়া শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট ও অন্য ডকুমেন্টস জমা রাখা হয়েছে। টাকা পরিশোধ করে নিয়ে যাবে। অন্য যারা হলে নেই তাদেরকেও টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিচ্ছি। অন্যথায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের ক্লিয়ারেন্স আটকে দিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবুল বাশার বলেন, আমরা শীঘ্রই সব হলের বিষয়ে অফিসিয়াল নোটিশ দিব। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যান্টিন, ডাইনিং এ কোনো জুলুম চলবে না। শিক্ষার্থীদের জন্য হলের নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা কাজ করছি।

শাহরিয়ার ইমন
শেকৃবি