১২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের সম্মুখে একাই দাড়িয়ে গিয়েছিলেন চবি প্রক্টর

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • / 34

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিলো। এসময় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে জিরো পয়েন্ট থেকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ একাই চলতে শুরু করেন ঘটনাস্থল সেই রেলক্রসিংয়ের উদ্দেশ্যে। তবে, শিক্ষার্থীরাও প্রিয় শিক্ষকের পিছু ছাড়েননি। মুহূর্তেই শত-শত শিক্ষার্থী সঙ্গী হন তাঁর। সহকারী প্রক্টরদের বলেন তিনি একাই যাবেন। মোকাবিলা করবেন তাদের। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট দূরত্বের পর আর যেতে দেননি প্রক্টর। এরপর এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন এবং তাদের ভুল ভাঙান।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় নিবেদিত প্রাণ ও সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া এই শিক্ষক সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করায় স্যার নিজেই সাহসের সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যান। স্যারের উদ্দেশ্য ছিলো আটকে পরা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ঝামেলাটা যেনো এলাকার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে। স্যারেরই এই সাহসী ভূমিকায় প্রত্যেকটা ছাত্র অভিভূত হয়। শিক্ষার্থীবান্ধব এমন একজন শিক্ষকই আমরা চেয়েছিলাম।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমাকে সাহস যুগিয়েছে, অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সেই সাহস ও অনুপ্রেরণা নিয়ে আমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছি। তাছাড়া, একদিন আমাদের উপাচার্য মহোদয় আমাকে বলেছিলেন, ‘প্রক্টর হিসেবে তানভীর, আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। এমনকি, আমি নিজেও আপনার কাজে কোনপ্রকার হস্তক্ষেপ করবো না।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘যদি প্রয়োজন মনে করেন, আমাকে আপনি ডাক দিবেন। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাবো।’ এই যে স্যার নিজেই দাঁড়িয়ে যাবেন বলেছেন। স্যার দাঁড়িয়ে যেতে পারলে আমি কেনো দাঁড়িয়ে যেতে পারবো না? ফলে আমিই দাঁড়িয়ে গেছি এবং একা চলে গেছি। যতোই সামনে আগাচ্ছিলাম আমার সাহস ততোই বেড়ে যাচ্ছিলো। এমনকি আমি যখন এলাকাবাসীর মাঝখানে চলে যাই, তখন তারা সকল অস্ত্র সস্ত্র লুকিয়ে ফেলেছে এবং আলোচনার ব্যাপারটি তারা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, ইতিবাচক ও সম্মানের সাথে গ্রহণ করেছে। তারা আমাকে কথা বলতে দিয়েছে। তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে শতভাগ সহযোগিতা করেছে আমাকে।

শেয়ার করুন

সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের সম্মুখে একাই দাড়িয়ে গিয়েছিলেন চবি প্রক্টর

প্রকাশিত: ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিলো। এসময় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে জিরো পয়েন্ট থেকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ একাই চলতে শুরু করেন ঘটনাস্থল সেই রেলক্রসিংয়ের উদ্দেশ্যে। তবে, শিক্ষার্থীরাও প্রিয় শিক্ষকের পিছু ছাড়েননি। মুহূর্তেই শত-শত শিক্ষার্থী সঙ্গী হন তাঁর। সহকারী প্রক্টরদের বলেন তিনি একাই যাবেন। মোকাবিলা করবেন তাদের। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট দূরত্বের পর আর যেতে দেননি প্রক্টর। এরপর এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন এবং তাদের ভুল ভাঙান।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় নিবেদিত প্রাণ ও সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া এই শিক্ষক সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করায় স্যার নিজেই সাহসের সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যান। স্যারের উদ্দেশ্য ছিলো আটকে পরা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ঝামেলাটা যেনো এলাকার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে। স্যারেরই এই সাহসী ভূমিকায় প্রত্যেকটা ছাত্র অভিভূত হয়। শিক্ষার্থীবান্ধব এমন একজন শিক্ষকই আমরা চেয়েছিলাম।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমাকে সাহস যুগিয়েছে, অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সেই সাহস ও অনুপ্রেরণা নিয়ে আমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছি। তাছাড়া, একদিন আমাদের উপাচার্য মহোদয় আমাকে বলেছিলেন, ‘প্রক্টর হিসেবে তানভীর, আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। এমনকি, আমি নিজেও আপনার কাজে কোনপ্রকার হস্তক্ষেপ করবো না।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘যদি প্রয়োজন মনে করেন, আমাকে আপনি ডাক দিবেন। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাবো।’ এই যে স্যার নিজেই দাঁড়িয়ে যাবেন বলেছেন। স্যার দাঁড়িয়ে যেতে পারলে আমি কেনো দাঁড়িয়ে যেতে পারবো না? ফলে আমিই দাঁড়িয়ে গেছি এবং একা চলে গেছি। যতোই সামনে আগাচ্ছিলাম আমার সাহস ততোই বেড়ে যাচ্ছিলো। এমনকি আমি যখন এলাকাবাসীর মাঝখানে চলে যাই, তখন তারা সকল অস্ত্র সস্ত্র লুকিয়ে ফেলেছে এবং আলোচনার ব্যাপারটি তারা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, ইতিবাচক ও সম্মানের সাথে গ্রহণ করেছে। তারা আমাকে কথা বলতে দিয়েছে। তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে শতভাগ সহযোগিতা করেছে আমাকে।