সমাজবিজ্ঞান সাবজেক্ট থেকে ভবিষ্যৎ
- প্রকাশিত: ০৪:০৭:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
- / 40
সমাজবিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমাজবিজ্ঞান (Sociology) সমাজের গঠন, কার্যক্রম, এবং পরিবর্তন সম্পর্কে অধ্যয়ন করে। এটি মানবসমাজের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে এবং সমাজের বিভিন্ন উপাদানগুলোর মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ মানুষ বা দলের বৈজ্ঞানিক আলোচনাই হচ্ছে সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞানের মূল কিছু ক্ষেত্র হল:
১) সামাজিক গঠন -পরিবার, ধর্ম, শিক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গঠন ও কার্যক্রম বিশ্লেষণ।
২) সামাজিক সম্পর্ক – বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী ও শ্রেণীর মধ্যে সম্পর্ক, সামাজিক সমতা ও বৈষম্য, এবং লিঙ্গ সম্পর্ক।
৩) সামাজিক পরিবর্তন – সমাজের পরিবর্তনশীল ধারা, সামাজিক আন্দোলন, এবং সংস্কৃতিগত পরিবর্তন।
৪) সামাজিক সমস্যা – দারিদ্র্য, অপরাধ, বেকারত্ব, দুর্নীতি, এবং অন্যান্য সামাজিক সমস্যাগুলোর কারণ এবং সমাধানের উপায়।
৫) সাংস্কৃতিক অধ্যয়ন- সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, এবং প্রথার ভূমিকা এবং তাদের পরিবর্তন।
৬) গোষ্ঠী ও সম্প্রদায় -ছোট ও বড় গোষ্ঠী, সম্প্রদায় এবং তাদের গতিবিধি।
৭) সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা – সামাজিক উন্নয়ন ও পরিকল্পনার জন্য নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
সমাজবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং সেগুলোর বিশ্লেষণ করে সামাজিক ধারা ও প্রবণতা নির্ধারণ করেন। এর মাধ্যমে সমাজের সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করা এবং সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়।
চাকরির ক্ষেত্র সমূহ :-
এ বিষয়ে পড়াশুনা শেষে আছে বিভিন্ন কর্মের হাতছানি। সমাজবিজ্ঞানে ডিগ্রীধারী শিক্ষার্থীদের রয়েছে সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পাশাপাশি দাতব্য এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থায় পেশাগতভাবে কাজ করার সুযোগ। একজন সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে যেমন ইউএনডিপি, ইউনেসকো, ইউনিসেফে চাকরি করে আন্তর্জাতিক স্কেলে বেতন প্রাপ্ত হন।
স্বপ্নের বিসিএস ক্যাডার:
সোশিওলোজির ছাত্ররা আলাদা সুযোগ পায়, অন্যান্য ক্যাডারের পাশাপাশি শিক্ষা ক্যাডারে তাদের জন্য রয়েছে নির্ধারিত আসন। বিসিএস এ অন্যান্য সাবজেক্টের তুলনায় সমাজবিজ্ঞানের স্টুডেন্টসদের টিকতে বেশি দেখা যায়। তাছাড়া অন্যান্য সকল সরকরি চাকরির দুয়ার খোলা এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল সরকারি ব্যাংকে। এছাড়া দেশে যতগুলো স্কুল-কলেজ,মাদরাসা রয়েছে সবখানেই বিদ্যমান সমাজবিজ্ঞান। আর এসব জায়গা রয়েছে শিক্ষকতার বিশাল সুযোগ। এছাড়া যারা স্কলারশিপ নিয়ে বাহিরে যেতে চায়, তাদের জন্যও রয়েছে ভালো সুযোগ। সেক্ষেত্রে দরকার ভালো সিজিপিএ, ভালো IELTS স্কোর এবং দুই একটি রিসার্চ পাবলিকেশনস থাকলে সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে।
দেশি-বিদেশি এনজিওতে এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে সমাজবিজ্ঞানের স্টুডেন্টদের ভালো চাকরির সুযোগতো আছেই। আর এনজিতেও সোশিলোজির ছাত্রদের আধিপত্য রয়েছে। আর এনজিও বিশাল জব সেক্টর তা হয়তো কল্পনারও বাহিরে। সোশিওলোজি পড়ে জব পাওয়াটা সহজ অন্য অনেক সাব্জেক্ট এর তুলনায়।
গবেষণা:
স্বপ্নের আরেকটি অধ্যায়। অনেকেরই ইচ্ছা থাকে নতুন কিছু উদ্ভাবন করার। সমাজের নানারকম সমস্যার সমাধান এবং নতুন সোশ্যাল ফেনোমেনা বের করাই গবেষকদের কাজ। এমনকি যোগ্য গবেষক হতে পারলে তাঁর বেতন টাকায় নয় ডলারে হয়ে থাকে। আর অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশের সরকারও দেশীয় সমাজবিজ্ঞানীদের কদর করে থাকেন। তাই বাংলাদেশের সরকারের আওতাধীন রয়েছে সামাজিকবিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে।
মোস্তফা কামাল, খুবি প্রতিনিধি