১১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাফল্যের ৫৪ বছরে পদার্পণ জাবি সাংবাদিক সমিতির: আপোষহীন পথচলা

মোঃ যোবায়ের হোসেন জাকির, জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: ০৭:২১:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / 163

৭০’এ পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনে জয়ী হতে বাঙালিদের মন জয় করার জন্য ব্যতিব্যস্ত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। তারই প্রেক্ষিতে উচ্চতর শিক্ষার জন্য ঢাকার অদূরে সাভারে সবুজের সমারোহে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হলো। বছরখানেক যেতে না যেতেই ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

৭১-এ রণাঙ্গনের দীর্ঘ নয় মাস পর মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতি ঘটে। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয় ঘটে। সেইসাথে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় ক্যাম্পাস ভিত্তিক সাংবাদিক সংগঠনের; যারা শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠতা ও সাহসিকতার সহিত সত্যকে প্রকাশ করার মানসিকতা লালন করবে। দেশবাসীকে নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অক্সিজেন সরবরাহ করবে।

সেই চাহিদার উপর ভিত্তি করেই ক্যাম্পাস ভিত্তিক দেশের প্রথম সাংবাদিক সংগঠন হিসাবে ১৯৭২ সালের ৩রা এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি-(জাবিসাস) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

সত্য ও নির্ভীকতাকে ছাপিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল ক্যাম্পাস গড়ার এক দীপ্ত শপথকে মাথায় নিয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থে দৃঢ়তার সহিত নিরলসভাবে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৩রা এপ্রিল) জাবি সাংবাদিক সমিতি সাফল্যের তিপ্পান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন-তে পদার্পণ করেছে।

ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তেমন কোন কার্যক্রম বা আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। ছুটি শেষে ক্যাম্পাস খোলার পর জমকালো আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের কথা জানান সংশ্লিষ্টতা।

প্রতিষ্ঠানকালীন সময়ে স্থায়ী কোন কার্যালয় না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বিরুনী হলের ক্যান্টিনে জাবির প্রথম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ আহমেদ আলীকে সভাপতি এবং একই ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল কাশেমকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।এটিই সংগঠনটির প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি হিসাবে পরিচিত।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠনটি সত্য, ন্যায় ও সাম্যের উপর দাঁড়িয়ে নির্ভীকতা ও সাহসিকতার সহিত শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশব্যাপী সকল যৌক্তিক আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি। ৯০’এর এরশাদবিরোধী আন্দোলন, ৯৮’এর ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন, দূর্নীতি বিরোধী আন্দোলন, যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন অন্যতম। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন নির্যাতন বিরোধী সেল প্রতিষ্ঠার রুপকার এই জাবিসাসই।

সর্বশেষ ২৪’এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি। দেশের সকল সংবাদ মাধ্যম যখন দেশের তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল। সারাদেশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আন্দোলনকারীরা যখন দিশেহারা তখন তাদের প্রাণে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিল এই সংগঠনটি।

এই সংগঠনের সাহসী সাংবাদিকরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একের পর এক আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করেছিল। যার ফলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি দিনের জন্যও আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়েনি।

জাবিসাসের আপোষহীন পথচলা আর সাহসিকতাকে অনুপ্রেরণা হিসাবে নিয়েছিল দেশের অন্যান্য ক্যাম্পাসগুলো। ১৭ জুলাই দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে হল ভ্যাকেন্ট দিয়ে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করলে প্রাণভয়ে একে একে সবাই বাড়ি চলে গেলেও রাত জেগে, খেয়ে না খেয়ে জাবিতে আন্দোলন জারি রাখতে ভূমিকা রেখেছিল এই সংগঠনের সাংবাদিকরা।

তাদের সাহসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন উদ্যোমে রাস্তায় নেমে পড়ে সারা দেশের ছাত্র, নাগরিক, জনতা। গণবিস্ফোরণে রুপ নেয় আন্দোলন। এর পরের ইতিহাস সকলেরই জানা।

সংস্কৃতির তীর্থভূমি হিসাবে জাহাঙ্গীরনগরের নাম সর্বজনবিদিত। এর পিছনে রয়েছে একাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নিরলস প্রচেষ্টা। সংস্কৃতিমনা ও প্রগতিশীল মানুষ তৈরির কারখানা বলা হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে। এখানকার মুক্তমঞ্ছে প্রায়ই আয়োজন করা হয় নানা ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালার। আর জাবিসাস এসব সংবাদ পরিবেশনে অত্যন্ত মনোযোগী ভূমিকা পালন করে।

গতানুগতিক সাংবাদিকতার বাইরে ক্রাইম রিপোর্টিং, স্পেশাল রিপোর্টিং এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা চর্চা করে এই সংগঠনটি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার উপর পুরস্কারের ব্যবস্থা চালু রেখেছে সংগঠনটি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চর্চার কারণে জাবিসাস থেকে উঠে এসেছে সংখ্যাধিক্য দেশবরেণ্য সাংবাদিক ; তাদের অনেকেই দেশে গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও আলো ছড়াচ্ছেন, দেশের মুখ উজ্জল করছেন।

একাডেমিক এর পাশাপাশি সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়ন, নীতিগত পরিবর্তন ও উৎকর্ষ সাধনের জন্য ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের বছরে কয়েকবার দেশি বিদেশি স্বনামধন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করে সংগঠনটি। এতে করে তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার পাশাপাশি মানসিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন হয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংগঠনটির সাবেক দায়িত্বশীলরা তাদের পেশাগত জীবনে অনেকেই সফলতার চূড়ান্ত শিখরে পৌছে গেছেন। তারা তাদের সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে মেধার সাক্ষর রেখে চলেছেন।

সাবেক দায়িত্বশীলরা জানান, দায়িত্ব পালনকালে অনেক প্রলোভন দেখানো হয়েছিল তাদের। সকল লোভ ও প্রলোভনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা সততার সহিত কাজ করেছেন বলে আজকে সফল হয়েছেন।

সাংবাদিকদের অধিকার আদায় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সংগঠনটি। বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিকরা একাধিকবার রক্তাক্ত হয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে বসে থাকেনি সংগঠনটি। প্রতিবাদের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল জাবিসাস। অভিযুক্তদের ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলো তদানীন্তন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অংশীজনদের সহিত একটি মিটিং-এ অংশ নিয়ে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের বেতন নূন্যতম আট হাজার টাকা করার সুপারিশ করেন সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি মেহেদী মামুন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটির পথচলা বাঁধাহীন ছিল না। একের পর এক হুমকি, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে সংগঠনটিকে। কিন্তু নেতৃবৃন্দের আপসহীনতা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার মানদণ্ডে মুখ লুকিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় সকল প্রতিবন্ধকতা।

সবশেষ ২৪’ এর আন্দোলনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংগঠনটির বর্তমান সভাপতিসহ একাধিক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন এবং অনেকের শরীরে এখনো ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেছে। তবুও থেমে নেই সংগঠনটির জয়যাত্রা। সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চ্যালেঞ্জ নিতে শিখে গেছে সংগঠনটির সকল সদস্যবৃন্দ।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত মোট তেতাল্লিশটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি কমিটিই অত্যন্ত দক্ষতা, গৌরব ও বস্তুনিষ্ঠতার সহিত তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছে। সেইসাথে উত্তরসূরীদেরও যোগ্য নেতৃত্বদানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের এমন কর্ম স্পৃহার কারণে এই সংগঠন থেকে শত শত সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে।

গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় মূলত তার গণতান্ত্রিক দায়িত্বের কারণে। গণতন্ত্রের মূল শক্তি হলো জনমত এবং এই জনমত গঠন করার প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এছাড়াও সরকারের সকল স্তরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গণমাধ্যম। তাই একে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

তেমনি করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার এক অনন্য নিদর্শন প্রতিস্থাপনের নজির দেখিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।

জাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুন বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাংবাদিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি-জাবিসাস। বাংলাদেশ এবং জাহাঙ্গীরনগরের সাথে প্রায় সমান্তরালে চলা এই সংগঠনটি একইসাথে উচ্চশিক্ষায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুনী সাংবাদিক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ এবং জাতীয় বিভিন্ন ইস্যূতে এর ভূমিকাও ছিল অগ্রণী।

তিনি আরও বলেন, জাবিসাসের সদস্যরা তাদের জীবন বাজি রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছে; যা আমাদেরকে এক নতুন যুগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আমরা আশা করি জাবিসাসের সদস্যরা জুলাই স্পিরিটকে ধারণ করে মুক্ত চিন্তা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। চুয়ান্নতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল অংশীজনদের জাবিসাসের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই”

জাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “জাবি সাংবাদিক সমিতি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে জাবি ক্যাম্পাসে অত্যন্ত গৌরবের সাথে তার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনদের নিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার নিমিত্তে সবসময় কাজ করার প্রচেষ্টা চলমান রেখেছি।

তিনি আরও বলেন, গবেষণা ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সকল সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিয়ে কাজ করার বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিশীল ও বদ্ধপরিকর। আজকে তার চুয়ান্নতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

জাবিসাস যেভাবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি গৌরবের তিপ্পান্ন বছর পেরিয়ে সকল অংশীজনদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেভাবেই যুগ যুগ ধরে এই সংগঠনের উত্তরসূরীরা এর সার-নির্যাস গ্রহন করবে।

দেশের ক্রান্তিলগ্নে জাবিসাস যেভাবে সাহসীকতা ও পেশাদারিত্বের সহিত সুস্থ ধারার ইনক্লুসিভ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চর্চা করেছে ঠিক সেভাবেই আগামীর দিনগুলোতে যাবতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সকল অংশীজনের সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ জাহাঙ্গীরনগর গড়ার দীপ্ত শপথ গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

শেয়ার করুন

সাফল্যের ৫৪ বছরে পদার্পণ জাবি সাংবাদিক সমিতির: আপোষহীন পথচলা

প্রকাশিত: ০৭:২১:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

৭০’এ পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনে জয়ী হতে বাঙালিদের মন জয় করার জন্য ব্যতিব্যস্ত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। তারই প্রেক্ষিতে উচ্চতর শিক্ষার জন্য ঢাকার অদূরে সাভারে সবুজের সমারোহে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হলো। বছরখানেক যেতে না যেতেই ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

৭১-এ রণাঙ্গনের দীর্ঘ নয় মাস পর মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতি ঘটে। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয় ঘটে। সেইসাথে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় ক্যাম্পাস ভিত্তিক সাংবাদিক সংগঠনের; যারা শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠতা ও সাহসিকতার সহিত সত্যকে প্রকাশ করার মানসিকতা লালন করবে। দেশবাসীকে নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অক্সিজেন সরবরাহ করবে।

সেই চাহিদার উপর ভিত্তি করেই ক্যাম্পাস ভিত্তিক দেশের প্রথম সাংবাদিক সংগঠন হিসাবে ১৯৭২ সালের ৩রা এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি-(জাবিসাস) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

সত্য ও নির্ভীকতাকে ছাপিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল ক্যাম্পাস গড়ার এক দীপ্ত শপথকে মাথায় নিয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থে দৃঢ়তার সহিত নিরলসভাবে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৩রা এপ্রিল) জাবি সাংবাদিক সমিতি সাফল্যের তিপ্পান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন-তে পদার্পণ করেছে।

ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তেমন কোন কার্যক্রম বা আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। ছুটি শেষে ক্যাম্পাস খোলার পর জমকালো আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের কথা জানান সংশ্লিষ্টতা।

প্রতিষ্ঠানকালীন সময়ে স্থায়ী কোন কার্যালয় না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বিরুনী হলের ক্যান্টিনে জাবির প্রথম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ আহমেদ আলীকে সভাপতি এবং একই ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল কাশেমকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।এটিই সংগঠনটির প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি হিসাবে পরিচিত।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠনটি সত্য, ন্যায় ও সাম্যের উপর দাঁড়িয়ে নির্ভীকতা ও সাহসিকতার সহিত শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশব্যাপী সকল যৌক্তিক আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি। ৯০’এর এরশাদবিরোধী আন্দোলন, ৯৮’এর ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন, দূর্নীতি বিরোধী আন্দোলন, যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন অন্যতম। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন নির্যাতন বিরোধী সেল প্রতিষ্ঠার রুপকার এই জাবিসাসই।

সর্বশেষ ২৪’এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি। দেশের সকল সংবাদ মাধ্যম যখন দেশের তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল। সারাদেশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আন্দোলনকারীরা যখন দিশেহারা তখন তাদের প্রাণে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিল এই সংগঠনটি।

এই সংগঠনের সাহসী সাংবাদিকরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একের পর এক আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করেছিল। যার ফলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি দিনের জন্যও আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়েনি।

জাবিসাসের আপোষহীন পথচলা আর সাহসিকতাকে অনুপ্রেরণা হিসাবে নিয়েছিল দেশের অন্যান্য ক্যাম্পাসগুলো। ১৭ জুলাই দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে হল ভ্যাকেন্ট দিয়ে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করলে প্রাণভয়ে একে একে সবাই বাড়ি চলে গেলেও রাত জেগে, খেয়ে না খেয়ে জাবিতে আন্দোলন জারি রাখতে ভূমিকা রেখেছিল এই সংগঠনের সাংবাদিকরা।

তাদের সাহসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন উদ্যোমে রাস্তায় নেমে পড়ে সারা দেশের ছাত্র, নাগরিক, জনতা। গণবিস্ফোরণে রুপ নেয় আন্দোলন। এর পরের ইতিহাস সকলেরই জানা।

সংস্কৃতির তীর্থভূমি হিসাবে জাহাঙ্গীরনগরের নাম সর্বজনবিদিত। এর পিছনে রয়েছে একাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নিরলস প্রচেষ্টা। সংস্কৃতিমনা ও প্রগতিশীল মানুষ তৈরির কারখানা বলা হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে। এখানকার মুক্তমঞ্ছে প্রায়ই আয়োজন করা হয় নানা ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালার। আর জাবিসাস এসব সংবাদ পরিবেশনে অত্যন্ত মনোযোগী ভূমিকা পালন করে।

গতানুগতিক সাংবাদিকতার বাইরে ক্রাইম রিপোর্টিং, স্পেশাল রিপোর্টিং এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা চর্চা করে এই সংগঠনটি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার উপর পুরস্কারের ব্যবস্থা চালু রেখেছে সংগঠনটি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চর্চার কারণে জাবিসাস থেকে উঠে এসেছে সংখ্যাধিক্য দেশবরেণ্য সাংবাদিক ; তাদের অনেকেই দেশে গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও আলো ছড়াচ্ছেন, দেশের মুখ উজ্জল করছেন।

একাডেমিক এর পাশাপাশি সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়ন, নীতিগত পরিবর্তন ও উৎকর্ষ সাধনের জন্য ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের বছরে কয়েকবার দেশি বিদেশি স্বনামধন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করে সংগঠনটি। এতে করে তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার পাশাপাশি মানসিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন হয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংগঠনটির সাবেক দায়িত্বশীলরা তাদের পেশাগত জীবনে অনেকেই সফলতার চূড়ান্ত শিখরে পৌছে গেছেন। তারা তাদের সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে মেধার সাক্ষর রেখে চলেছেন।

সাবেক দায়িত্বশীলরা জানান, দায়িত্ব পালনকালে অনেক প্রলোভন দেখানো হয়েছিল তাদের। সকল লোভ ও প্রলোভনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা সততার সহিত কাজ করেছেন বলে আজকে সফল হয়েছেন।

সাংবাদিকদের অধিকার আদায় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সংগঠনটি। বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিকরা একাধিকবার রক্তাক্ত হয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে বসে থাকেনি সংগঠনটি। প্রতিবাদের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল জাবিসাস। অভিযুক্তদের ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলো তদানীন্তন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অংশীজনদের সহিত একটি মিটিং-এ অংশ নিয়ে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের বেতন নূন্যতম আট হাজার টাকা করার সুপারিশ করেন সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি মেহেদী মামুন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটির পথচলা বাঁধাহীন ছিল না। একের পর এক হুমকি, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে সংগঠনটিকে। কিন্তু নেতৃবৃন্দের আপসহীনতা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার মানদণ্ডে মুখ লুকিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় সকল প্রতিবন্ধকতা।

সবশেষ ২৪’ এর আন্দোলনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংগঠনটির বর্তমান সভাপতিসহ একাধিক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন এবং অনেকের শরীরে এখনো ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেছে। তবুও থেমে নেই সংগঠনটির জয়যাত্রা। সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চ্যালেঞ্জ নিতে শিখে গেছে সংগঠনটির সকল সদস্যবৃন্দ।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত মোট তেতাল্লিশটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি কমিটিই অত্যন্ত দক্ষতা, গৌরব ও বস্তুনিষ্ঠতার সহিত তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছে। সেইসাথে উত্তরসূরীদেরও যোগ্য নেতৃত্বদানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের এমন কর্ম স্পৃহার কারণে এই সংগঠন থেকে শত শত সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে।

গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় মূলত তার গণতান্ত্রিক দায়িত্বের কারণে। গণতন্ত্রের মূল শক্তি হলো জনমত এবং এই জনমত গঠন করার প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এছাড়াও সরকারের সকল স্তরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গণমাধ্যম। তাই একে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

তেমনি করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার এক অনন্য নিদর্শন প্রতিস্থাপনের নজির দেখিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।

জাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুন বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাংবাদিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি-জাবিসাস। বাংলাদেশ এবং জাহাঙ্গীরনগরের সাথে প্রায় সমান্তরালে চলা এই সংগঠনটি একইসাথে উচ্চশিক্ষায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুনী সাংবাদিক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ এবং জাতীয় বিভিন্ন ইস্যূতে এর ভূমিকাও ছিল অগ্রণী।

তিনি আরও বলেন, জাবিসাসের সদস্যরা তাদের জীবন বাজি রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছে; যা আমাদেরকে এক নতুন যুগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আমরা আশা করি জাবিসাসের সদস্যরা জুলাই স্পিরিটকে ধারণ করে মুক্ত চিন্তা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। চুয়ান্নতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল অংশীজনদের জাবিসাসের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই”

জাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “জাবি সাংবাদিক সমিতি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে জাবি ক্যাম্পাসে অত্যন্ত গৌরবের সাথে তার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনদের নিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার নিমিত্তে সবসময় কাজ করার প্রচেষ্টা চলমান রেখেছি।

তিনি আরও বলেন, গবেষণা ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সকল সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিয়ে কাজ করার বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিশীল ও বদ্ধপরিকর। আজকে তার চুয়ান্নতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

জাবিসাস যেভাবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি গৌরবের তিপ্পান্ন বছর পেরিয়ে সকল অংশীজনদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেভাবেই যুগ যুগ ধরে এই সংগঠনের উত্তরসূরীরা এর সার-নির্যাস গ্রহন করবে।

দেশের ক্রান্তিলগ্নে জাবিসাস যেভাবে সাহসীকতা ও পেশাদারিত্বের সহিত সুস্থ ধারার ইনক্লুসিভ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চর্চা করেছে ঠিক সেভাবেই আগামীর দিনগুলোতে যাবতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সকল অংশীজনের সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ জাহাঙ্গীরনগর গড়ার দীপ্ত শপথ গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।