বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গোপন নথি গভীর রাতে ফেসবুকে স্টোরি দিলেন উপাচার্যের পিএস - পাবলিকিয়ান টুডে | বাংলাদেশ ও বিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গোপন নথি গভীর রাতে ফেসবুকে স্টোরি দিলেন উপাচার্যের পিএস

BU CORRESPONDENT প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১৯:১২

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের একাধিক গোপন নথির ছবি নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে ভাইরাল করার অভিযোগ উঠেছে।  

সোমবার (২৭ অক্টোবর) গভীর রাতে তিনি ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের স্টোরিতে এসব নথির ছবি আপলোড করেন বলে জানা গেছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেগুলো মুছে ফেলা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিজানুর রহমান তার স্টোরিতে প্রায় ৫০টি গোপন নথির ছবি শেয়ার করেছিলেন। স্ক্রিনশট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব নথির মধ্যে রেজিস্ট্রার দপ্তর ও উপাচার্য দপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ছিল। এছাড়াও তার ব্যক্তিগত কিছু ছবি, নিজস্ব ভবনের মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র ও সন্তানদের জন্মনিবন্ধনের ছবিও স্টোরিতে শেয়ার করা হয়।

নথিগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তার বিপক্ষ গ্রুপভুক্ত কয়েকজন কর্মকর্তা ও শিক্ষকের গোপন ফাইলও সেখানে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, “উপাচার্যের কাছে অবহিতকরণের জন্য আমি একটি আবেদনপত্র দিয়েছিলাম। সেই আবেদনপত্রসহ বেশ কিছু গোপন নথির ছবি গতকাল ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হুমকিস্বরূপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোপন ফাইল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা গুরুতর অপরাধ। আশাকরি কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”

প্রকাশিত ফাইলগুলোর মধ্যে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতির নথি, শাস্তিমূলক প্রতিবেদন, তদন্ত প্রতিবেদন, অডিট আপত্তির নথি এবং শিক্ষার্থীদের মামলার তথ্যসংবলিত কাগজপত্রও রয়েছে। এমনকি কিছু কর্মকর্তার চাকরির আবেদনপত্রের ব্যক্তিগত ছবিও তার ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “মিজানুর রহমান এর আগেও বিভিন্ন সময় গোপন নথির ছবি তুলে অন্যত্র সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “শিক্ষক–কর্মকর্তাদের গোপনীয় ফাইল প্রকাশ করা গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ। আইন অনুযায়ী এর যথাযথ বিচার হওয়া উচিত, নইলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়।”

অভিযুক্ত উপাচার্যের পিএস মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমি বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানি না। কীভাবে এসব ছবি আমার ফেসবুক স্টোরিতে গেল, তা আমি বুঝতে পারছি না। ব্যক্তিগত ছবিগুলো কিভাবে সেখানে এসেছে, তাও আমার অজানা।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, “আমি এখনো বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে জানা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পাবলিকিয়ান টুডে/ এসএইচ | ফেসবুক