০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্যাসিস্ট শক্তি জয়ী হলে দুই লাখ মানুষকে জেলে যেতে হতো

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ১১:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 16

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ আমলে বিশ্বের ইতিহাসে বড় ধরনের লুটপাট হয়েছে বাংলাদেশে। চোরতন্ত্র তৈরি করেছিলেন শেখ হাসিনা। বড় বড় কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেয়া ছিল তার কাজ। সে সময় বিদেশে টাকা পাচারকারীরা এখন সেই টাকায় প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে, এখানে এখন মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে, কোনো গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। পরাজিত শক্তি আবার আপনাদের জঙ্গি বানাতে চায়।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও পরবর্তী প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

1000181835 পাবলিকিয়ান টুডে | Publician Today

জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, অনেক গণমাধ্যম আন্দোলনকারীদের ‘জাতির শত্রু’ হিসেবে তুলে ধরেছিল। গণমাধ্যমের ভাষা ব্যবহার করে তখন শাসকদের কাছে বার্তা দেয়া হচ্ছিল এই আন্দোলনকারীদের দমন করা উচিত। যদি ফ্যাসিস্ট শক্তি জয়ী হত, তাহলে দুই লাখ মানুষকে জেলে যেতে হত, আর তখন ন্যারেটিভ হত যে কিছু দুর্বৃত্ত দেশজুড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরো বলেন, জুলাইয়ের মত মহৎ সময় আমাদের জন্য পূর্বে আর কোনবার আসেনি। আমাদের সাংবাদিকরা ১৯৭১ এর যুদ্ধ কতটুকু দেখেছে আমি জানি না। আমাদের এক কোটি লোক শরনার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। এদের মানবেতর জীবন ও দুঃখ দুর্দশা নিয়ে খুব কমই লেখা পাওয়া যায়। এসব নিয়ে আমরা স্টোরি করিনি। আমাদের আমাদের রাইটিং এর অভ্যাসটাটা খুব কম। লেখার অভ্যাস বাড়াতে হবে

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, শেখ হাসিনা বৃহত্তম জেলখানা, বৃহত্তম গোরস্থান তৈরি করেছিল। এতেই বোঝা উচিত ছিলো, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিলো।
শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী তারা ফ্যাসিবাদের এক ধরণের সহযোগী ছিলো। ফ্যাসিবাদ কোন প্রতিষ্ঠান নয়, ফ্যাসিবাদ হলো জমিদারি ও কর্তৃত্ব। আমরা সেই জমিদারি ও কর্তৃত্বের অবসান করতে চাই। আমাদের ভিশনটা (লক্ষ্য) হবে জাতীয় ও জনগোষ্ঠীর স্বার্থ কেন্দ্রিক।

তিনি আরো বলেন, ২০০৬-০৭ সালের জরুরি অবস্থাকে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারেনি। এটা ছিলো মাইনাস টু থিওরি। আজকেও আন্দোলনের অংশীদাররা কাউকে মাইনাস করতে চায়, তাদেরও একই অবস্থা হবে।

অনুষ্ঠানে জবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, স্বৈরাচার ইতিহাস আমরা যা দেখেছি, তা বর্ণনা করতে গেলে কয়েক ঘন্টা লেগে যাবে। স্বৈরাচার যখন কেন একটা ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তখন বলা হত, ছাত্রদল অথবা শিবির মরেছে। তাহলে তাহর পাশে কাউকে দেখা যেত না।

জবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন কিমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জবি সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি আসাদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগের শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

ফ্যাসিস্ট শক্তি জয়ী হলে দুই লাখ মানুষকে জেলে যেতে হতো

প্রকাশিত: ১১:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ আমলে বিশ্বের ইতিহাসে বড় ধরনের লুটপাট হয়েছে বাংলাদেশে। চোরতন্ত্র তৈরি করেছিলেন শেখ হাসিনা। বড় বড় কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেয়া ছিল তার কাজ। সে সময় বিদেশে টাকা পাচারকারীরা এখন সেই টাকায় প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে, এখানে এখন মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে, কোনো গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। পরাজিত শক্তি আবার আপনাদের জঙ্গি বানাতে চায়।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও পরবর্তী প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

1000181835 পাবলিকিয়ান টুডে | Publician Today

জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, অনেক গণমাধ্যম আন্দোলনকারীদের ‘জাতির শত্রু’ হিসেবে তুলে ধরেছিল। গণমাধ্যমের ভাষা ব্যবহার করে তখন শাসকদের কাছে বার্তা দেয়া হচ্ছিল এই আন্দোলনকারীদের দমন করা উচিত। যদি ফ্যাসিস্ট শক্তি জয়ী হত, তাহলে দুই লাখ মানুষকে জেলে যেতে হত, আর তখন ন্যারেটিভ হত যে কিছু দুর্বৃত্ত দেশজুড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরো বলেন, জুলাইয়ের মত মহৎ সময় আমাদের জন্য পূর্বে আর কোনবার আসেনি। আমাদের সাংবাদিকরা ১৯৭১ এর যুদ্ধ কতটুকু দেখেছে আমি জানি না। আমাদের এক কোটি লোক শরনার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। এদের মানবেতর জীবন ও দুঃখ দুর্দশা নিয়ে খুব কমই লেখা পাওয়া যায়। এসব নিয়ে আমরা স্টোরি করিনি। আমাদের আমাদের রাইটিং এর অভ্যাসটাটা খুব কম। লেখার অভ্যাস বাড়াতে হবে

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, শেখ হাসিনা বৃহত্তম জেলখানা, বৃহত্তম গোরস্থান তৈরি করেছিল। এতেই বোঝা উচিত ছিলো, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিলো।
শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী তারা ফ্যাসিবাদের এক ধরণের সহযোগী ছিলো। ফ্যাসিবাদ কোন প্রতিষ্ঠান নয়, ফ্যাসিবাদ হলো জমিদারি ও কর্তৃত্ব। আমরা সেই জমিদারি ও কর্তৃত্বের অবসান করতে চাই। আমাদের ভিশনটা (লক্ষ্য) হবে জাতীয় ও জনগোষ্ঠীর স্বার্থ কেন্দ্রিক।

তিনি আরো বলেন, ২০০৬-০৭ সালের জরুরি অবস্থাকে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারেনি। এটা ছিলো মাইনাস টু থিওরি। আজকেও আন্দোলনের অংশীদাররা কাউকে মাইনাস করতে চায়, তাদেরও একই অবস্থা হবে।

অনুষ্ঠানে জবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, স্বৈরাচার ইতিহাস আমরা যা দেখেছি, তা বর্ণনা করতে গেলে কয়েক ঘন্টা লেগে যাবে। স্বৈরাচার যখন কেন একটা ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তখন বলা হত, ছাত্রদল অথবা শিবির মরেছে। তাহলে তাহর পাশে কাউকে দেখা যেত না।

জবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন কিমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জবি সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি আসাদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগের শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।