০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ কুয়াশা উৎসবে প্রাণের ভীড়

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০৩:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 19

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

শিশিরের মতো নির্মল হওয়ার আহ্বানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব-১৪৩১।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাগ সংগীত ও পিঠা-পুলির আসরের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য— “শিশিরের মতো নির্মল হও প্রাণ, কুয়াশায় ভিজে মুক্ত অনির্বাণ।” চতুর্থবারের মতো আয়োজিত এ উৎসবে মেতে উঠেছেন শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা।

২০১৯ সালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো কুয়াশা উৎসবের পরিকল্পনা করেন। অর্থ সংকট থাকলেও দমে যাননি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দল গঠন করে গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। সেই অর্থেই তৈরি হয় কুঁড়েঘর, গরুর গাড়িসহ গ্রামীণ পরিবেশের নানা উপকরণ। প্রথমবারেই ব্যাপক সাড়া ফেলে উৎসবটি।

করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ২০২৪ সালে এটি পুনরায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়। তবে এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় খেলার মাঠের পরিবর্তে চুরুলিয়া মঞ্চ, নজরুল বেদি, জয়ধ্বনি মঞ্চ ও ক্যাম্পাসের সড়কে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আয়োজন।

এবারের কুয়াশা উৎসবে থাকছে— চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, লোকনৃত্য, সাহিত্য আলোচনা, রাগ সংগীত, অভিক নৃ, ঘাটু গান, রস উৎসব, পিঠা পার্বণসহ নানা আয়োজন। কোনো স্পন্সর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতায় উৎসবটি পরিচালিত হচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, উৎসবের রঙে বদলে গেছে পুরো এলাকা। চুরুলিয়া মঞ্চে চলছে সাহিত্য আড্ডা “ভয়”, যেখানে অংশ নেন গায়ক ও লেখক অরুপ রাহী, লেখক ও শিক্ষক উম্মে ফারহানা ও রবীন্দ্র কুমার রায়। নজরুল বেদিতে চলছে গানের আসর। পিঠার দোকান, বইয়ের স্টল আর উপজাতীয় সম্প্রদায়ের তৈরি কুঁড়েঘর দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে।

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী তুলি শাহনাজ বলেন, “প্রতি বছর আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি। এটি আমাদের প্রাণের আয়োজন। প্রতি বছর এভাবে কুয়াশা উৎসব পালিত হোক।”

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী অরিন সাহা জানান, “শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ ও অর্থায়নেই কুয়াশা উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। এটি শুধু উৎসব নয়, আমাদের ঐক্যের প্রতীক।”

ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা মনোজ কুমার প্রামাণিক বলেন, “কোনো স্পন্সর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও আমাদের সহযোগিতায় কুয়াশা উৎসবের আয়োজন সম্ভব হয়েছে। এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বাইরের দর্শনার্থীরাও এতে যোগ দিচ্ছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “শিক্ষার্থীদের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। এই উৎসব যেন সবার মধ্যে মিলনমেলা ও ভাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে এবং ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে, সেই কামনা করছি।”


/অনিরুদ্ধ সাজ্জাদ

শেয়ার করুন

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ কুয়াশা উৎসবে প্রাণের ভীড়

প্রকাশিত: ০৩:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

শিশিরের মতো নির্মল হওয়ার আহ্বানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব-১৪৩১।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাগ সংগীত ও পিঠা-পুলির আসরের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য— “শিশিরের মতো নির্মল হও প্রাণ, কুয়াশায় ভিজে মুক্ত অনির্বাণ।” চতুর্থবারের মতো আয়োজিত এ উৎসবে মেতে উঠেছেন শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা।

২০১৯ সালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো কুয়াশা উৎসবের পরিকল্পনা করেন। অর্থ সংকট থাকলেও দমে যাননি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দল গঠন করে গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। সেই অর্থেই তৈরি হয় কুঁড়েঘর, গরুর গাড়িসহ গ্রামীণ পরিবেশের নানা উপকরণ। প্রথমবারেই ব্যাপক সাড়া ফেলে উৎসবটি।

করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ২০২৪ সালে এটি পুনরায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়। তবে এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় খেলার মাঠের পরিবর্তে চুরুলিয়া মঞ্চ, নজরুল বেদি, জয়ধ্বনি মঞ্চ ও ক্যাম্পাসের সড়কে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আয়োজন।

এবারের কুয়াশা উৎসবে থাকছে— চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, লোকনৃত্য, সাহিত্য আলোচনা, রাগ সংগীত, অভিক নৃ, ঘাটু গান, রস উৎসব, পিঠা পার্বণসহ নানা আয়োজন। কোনো স্পন্সর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতায় উৎসবটি পরিচালিত হচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, উৎসবের রঙে বদলে গেছে পুরো এলাকা। চুরুলিয়া মঞ্চে চলছে সাহিত্য আড্ডা “ভয়”, যেখানে অংশ নেন গায়ক ও লেখক অরুপ রাহী, লেখক ও শিক্ষক উম্মে ফারহানা ও রবীন্দ্র কুমার রায়। নজরুল বেদিতে চলছে গানের আসর। পিঠার দোকান, বইয়ের স্টল আর উপজাতীয় সম্প্রদায়ের তৈরি কুঁড়েঘর দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে।

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী তুলি শাহনাজ বলেন, “প্রতি বছর আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি। এটি আমাদের প্রাণের আয়োজন। প্রতি বছর এভাবে কুয়াশা উৎসব পালিত হোক।”

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী অরিন সাহা জানান, “শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ ও অর্থায়নেই কুয়াশা উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। এটি শুধু উৎসব নয়, আমাদের ঐক্যের প্রতীক।”

ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা মনোজ কুমার প্রামাণিক বলেন, “কোনো স্পন্সর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও আমাদের সহযোগিতায় কুয়াশা উৎসবের আয়োজন সম্ভব হয়েছে। এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বাইরের দর্শনার্থীরাও এতে যোগ দিচ্ছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “শিক্ষার্থীদের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। এই উৎসব যেন সবার মধ্যে মিলনমেলা ও ভাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে এবং ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে, সেই কামনা করছি।”


/অনিরুদ্ধ সাজ্জাদ