চাকরিতে ডিপ্লোমা কোটা বাতিলের দাবি রুয়েট শিক্ষার্থীদের
- প্রকাশিত: ১১:১৮:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
- / 18
রুয়েট প্রতিনিধি:
মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কর্মবিভাগে সরাসরি জনবল নিয়োগের কথা সংবিধানে বলা থাকলেও দশম গ্রেডে ইঞ্জিনিয়ারিং চাকুরিতে শতভাগ ডিপ্লোমা কোটা ও নবম গ্রেডের চাকরিতে ৩৩ শতাংশ ডিপ্লোমা করা রাখা হয়েছে। যা সাংবিধানিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে দাবি করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
ডিপ্লোমা কোটা বাতিল ও চাকরি ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে রুয়েট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা এমন দাবি করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ প্রদান ও কর্মবিভাগে সরাসরি জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরকারি চাকরির ১০ম গ্রেডে শতভাগ ও ৯ম গ্রেডে পদোন্নতিতে ৩৩ শতাংশ ডিপ্লোমা কোটা প্রদান করা হয়। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের এই বৈষম্যমূলক আচরণ ও অন্যায্য সুবিধা ভোগের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন দিন ধরে কথা বলে আসছিলেন বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশ আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: ববি অধ্যাপককে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি
সমাবেশে শিক্ষার্থী তিন দফা দাবি জানান, সংবিধানের আর্টিকেল ২৯ এ ‘ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামেও সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেয়া যাবে না। টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে অর্থাৎ ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীকে পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করতে পারবেনা, এই মর্মে আইন পাশ করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।’
সমাবেশে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী বলেন, “দীর্ঘ ৪ বছর কঠিন পাঠ্যক্রম, ল্যাব, থিসিস ও প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে পাস করা বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা চাকরির বাজারে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সরকারি নিয়োগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রাধান্য ও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চতর পদে প্রবেশে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা পেশাগত মর্যাদা ও ন্যায্যতা লঙ্ঘন করে।”
সমাবেশের আয়োজকদের একজন ও রুয়েট ইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী মায়িন উদ্দিন বলেন,”চাকুরি ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানদের কাছে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদেরকে প্রতিনিয়ত হেনস্থার শিকার হতে হয়। আমরা আজ যে ১০ম গ্রেডের কথা বলছি, তার পুরোটাই ডিপ্লোমাদের দ্বারা কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে, যেখানে যোগ্যতা প্রমাণের কোনো সুযোগই রাখা হয়নি, যা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থারই নামান্তর।”
এ সময় পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাদি বলেন,”সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১০ম গ্রেডে পদ সংখ্যা ৯ গ্রেড থেকে অনেক বেশি হয়। ১০ম গ্রেডে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগের কোনো সুযোগই রাখা হয়নি। অবাক করার বিষয় হলো, যারা কিনা বলতে গেলে ইন্টার সমমান যোগ্যতা রাখে, সেই ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা ৯ম গ্রেডের কোটায় পদোন্নতির মাধ্যমে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদেরও বস পর্যন্ত বনে যাচ্ছে। কোনো রকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই এই চরম বৈষম্য বাংলাদেশ বলেই সম্ভব হচ্ছে।”
আজকের এই সমাবেশে সকল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছিলো। আয়োজকেরা এটিকে একটি “অধিকার আদায়ের আন্দোলন” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।