০৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘তুমি কে আমি কে ফ্যাসিস্ট, কে বলেছে শিক্ষক’ স্লোগানে বাকৃবিতে মশাল মিছিল

রিসালাত আলিফ, বাকৃবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: ১০:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
  • / 112

কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে সমাবর্তন চত্বরে এসে সমবেত হন আন্দোলনকারীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা অনুষদের শিক্ষকদের করা মন্তব্যের জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ‘তুমি কে আমি কে ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিস্ট, কে বলেছে কে বলেছে শিক্ষক, শিক্ষক’, ‘এক দুই তিন চার, ফ্যাসিস্ট কেনো বললো স্যার’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন চত্বরে সমস্বরে ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটি গেয়ে প্রতিবাদ জানান।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের এ ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনকে ফ্যাসিজমের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এর আগে আমাদেরকে ট্যাগ দেয়া হয়েছিল ‘কতিপয় বিপথগামী’ বলে। একটি যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে এভাবে অপদস্থ করা এবং স্বৈরাচারী হাসিনার সাথে তুলনা করা অত্যন্ত দুঃখজনক, বিব্রতকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের কাছ থেকে এমন বিবৃতি অপ্রত্যাশিত।

তারা আরো জানান, আমাদের এই আন্দোলন ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে- এই আন্দোলনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বারবার এটিকে রাজনৈতিক খাতে প্রবাহিত করার জন্য নানা দিক থেকে নানা অপচেষ্টা চলছে যা অত্যন্ত অবমাননাকর।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়; বরং এটি আমাদের সবার সম্মিলিত ভবিষ্যৎ ও অধিকার রক্ষার সংগ্রাম। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান- এরূপ অপপ্রচার অবিলম্বে বন্ধ করে দ্রুত কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রণয়নের লক্ষ্যে আগামী বুধবার জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল ডাকার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে একইদিন সকালে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশুপালন অনুষদ কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, আমরা মনে করি সদ্য ভর্তিকৃত লেভেল-১ সেমিস্টার-১ এর শিক্ষার্থীদের তুলনায় এম.এস. শিক্ষার্থীদের উক্ত ভোটদানের সুযোগ দেয়া ছিলো অধিকতর যুক্তিযুক্ত। এছাড়াও ভোট চলাকালীন সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের হলে হলে প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক প্রভাবিত করে তাদের সুবিধামত সাধারন শিক্ষার্থীদের ভোটদানে বাধ্য করেন। যা ছিলো ফ্যাসিবাদী শেখ-হাসিনা সরকারের সময়ের নির্বাচনী পরিবেশের অনুরুপ। সুতরাং আমরা মনে করি সাধারন শিক্ষার্থীবৃন্দ স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে নি।

শিক্ষকরা জানান, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বৈরাচারী রাজনীতিবিদ এবং যুগ্ম সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাসিম চক্রান্ত করে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন ২০১৯ সালে সর্বশেষ সংশোধনীতে অন্যায়ভাবে পশু ব্যবস্থাপনার ডোমেইন অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তারই নীলনকশা অনুযায়ী পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তথাকথিত কম্বাইন্ড নামে (বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স অ্যান্ড এএইচ) ডিগ্রিসমূহ চালু করেন, যেখানে ৭০-৭৫ শতাংশ চিকিৎসা সম্পর্কিত কোর্স পড়ানো হয়। যার ফলে পশু ব্যবস্থাপনায় ২৫-৩০ শতাংশ কোর্স দিয়ে যুগোপযোগী দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি করা সম্ভব নয়। তথাকথিত কম্বাইন্ড ডিগ্রি নামক এ অসম্পূর্ণ ডিগ্রি দ্বারা এ স্পেশালাইজেশনের যুগে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের গতি মন্থর এবং স্থবির হয়ে যাবে।

পাবলিকিয়ান টুডে/ এম

শেয়ার করুন

‘তুমি কে আমি কে ফ্যাসিস্ট, কে বলেছে শিক্ষক’ স্লোগানে বাকৃবিতে মশাল মিছিল

প্রকাশিত: ১০:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে সমাবর্তন চত্বরে এসে সমবেত হন আন্দোলনকারীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা অনুষদের শিক্ষকদের করা মন্তব্যের জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ‘তুমি কে আমি কে ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিস্ট, কে বলেছে কে বলেছে শিক্ষক, শিক্ষক’, ‘এক দুই তিন চার, ফ্যাসিস্ট কেনো বললো স্যার’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন চত্বরে সমস্বরে ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটি গেয়ে প্রতিবাদ জানান।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের এ ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনকে ফ্যাসিজমের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এর আগে আমাদেরকে ট্যাগ দেয়া হয়েছিল ‘কতিপয় বিপথগামী’ বলে। একটি যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে এভাবে অপদস্থ করা এবং স্বৈরাচারী হাসিনার সাথে তুলনা করা অত্যন্ত দুঃখজনক, বিব্রতকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের কাছ থেকে এমন বিবৃতি অপ্রত্যাশিত।

তারা আরো জানান, আমাদের এই আন্দোলন ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে- এই আন্দোলনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বারবার এটিকে রাজনৈতিক খাতে প্রবাহিত করার জন্য নানা দিক থেকে নানা অপচেষ্টা চলছে যা অত্যন্ত অবমাননাকর।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়; বরং এটি আমাদের সবার সম্মিলিত ভবিষ্যৎ ও অধিকার রক্ষার সংগ্রাম। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান- এরূপ অপপ্রচার অবিলম্বে বন্ধ করে দ্রুত কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রণয়নের লক্ষ্যে আগামী বুধবার জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল ডাকার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে একইদিন সকালে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশুপালন অনুষদ কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, আমরা মনে করি সদ্য ভর্তিকৃত লেভেল-১ সেমিস্টার-১ এর শিক্ষার্থীদের তুলনায় এম.এস. শিক্ষার্থীদের উক্ত ভোটদানের সুযোগ দেয়া ছিলো অধিকতর যুক্তিযুক্ত। এছাড়াও ভোট চলাকালীন সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের হলে হলে প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক প্রভাবিত করে তাদের সুবিধামত সাধারন শিক্ষার্থীদের ভোটদানে বাধ্য করেন। যা ছিলো ফ্যাসিবাদী শেখ-হাসিনা সরকারের সময়ের নির্বাচনী পরিবেশের অনুরুপ। সুতরাং আমরা মনে করি সাধারন শিক্ষার্থীবৃন্দ স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে নি।

শিক্ষকরা জানান, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বৈরাচারী রাজনীতিবিদ এবং যুগ্ম সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাসিম চক্রান্ত করে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন ২০১৯ সালে সর্বশেষ সংশোধনীতে অন্যায়ভাবে পশু ব্যবস্থাপনার ডোমেইন অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তারই নীলনকশা অনুযায়ী পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তথাকথিত কম্বাইন্ড নামে (বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স অ্যান্ড এএইচ) ডিগ্রিসমূহ চালু করেন, যেখানে ৭০-৭৫ শতাংশ চিকিৎসা সম্পর্কিত কোর্স পড়ানো হয়। যার ফলে পশু ব্যবস্থাপনায় ২৫-৩০ শতাংশ কোর্স দিয়ে যুগোপযোগী দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি করা সম্ভব নয়। তথাকথিত কম্বাইন্ড ডিগ্রি নামক এ অসম্পূর্ণ ডিগ্রি দ্বারা এ স্পেশালাইজেশনের যুগে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের গতি মন্থর এবং স্থবির হয়ে যাবে।

পাবলিকিয়ান টুডে/ এম