০৯:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৪ বছরে পদার্পণ করলো বশেমুরবিপ্রবি

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ১২:৫৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • / 20

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের অদূরেই ছায়া নিবিড় পরিবেশে অবস্থান করছে ৫৫ একরের বশেমুরবিপ্রবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূন্যভূমিতে তার নাম অনুসারে ২০০১ সালের ৮ই জুলাই জাতীয় সংসদে এক আইন পাশের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো ১৯৯৯ সালে।

১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এম খায়রুল আলম খানকে প্রকল্প পরিচালক নিযুক্ত করে গোপালগঞ্জে পাঠানো হয়। ২০০১ সালের ৮ জুলাই মহান জাতীয় সংসদে আইন পাসের পর একই বছরের ১৩ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ১৯ জুলাই মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. খায়রুল আলমকে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে চারদলীয়জোট জলীয় জোট ক্ষমতায় আসলে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। ২০০২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।

২০০৮ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প আবার আশার আলো দেখে। ২০০৯ সাল থেকে আবার পুনরায় পূর্ণ গতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়।

২০১০ সালের ৫ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে নিয়োগ করেন এবং ২০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ আইন-২০০১ বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসআরও জারি করে। পরবর্তীতে ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে পুনরায় ৪ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।

২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র চারটি অনুষদ নিয়ে একাডেমিক যাত্রা শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে চারটি অনুষদ; প্রকৌশল, বিজ্ঞান, ব্যবসা অধ্যয়ন এবং মানবিক অনুষদে পাঁচটি বিভাগ যথাক্রমে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক্স, গণিত, ব্যবস্থাপনা ও ইংরেজি বিভাগ খোলা হয়। প্রতি বিভাগে ৩২ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে ৭টি অনুষদের অধীনে ৩৪টি বিভাগ ও ৩টি ইনস্টিটিউটে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের তথ্য মতে, শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য নিয়োজিত রয়েছে ২৭২ জন শিক্ষক। এর পাশাপাশি ১১২ জন কর্মকর্তা ও ২৫১ জন কর্মচারীর সমন্বয়ে চলছে বশেমুরবিপ্রবি।

৫৫ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে একটি ১০ তলা বিশিষ্ট আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক হল। যথাক্রমে- বিজয় দিবস হল, স্বাধীনতা দিবস হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শেখ রেহানা হল, শেখ রাসেল হল।

এছাড়া প্রশাসনিক ভবন, একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরি ভবন, ক্যাফেটারিয়া, কেন্দ্রীয় মসজিদ, মন্দির।নির্মাণাধীন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- মেইন গেট, ১৫ কোটি ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, আইটি পার্ক ইত্যাদির নির্মান কাজ চলমান রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অবসর সময় কাটানোর জন্য রয়েছে জয়বাংলা চত্ত্বর, আই+ওয়ান চত্ত্বর, ফুচকা চত্ত্বর, শেখ হাসিনা চত্ত্বর, শহীদ মিনার, আইআর চত্ত্বর, আইন চত্ত্বর, অর্ঘ্য চত্ত্বর, লিপুস ক্যান্টিন, বালুর মাঠ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, লেকপাড়, টিলা।

প্রতি বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও গবেষণায় ভূমিকা রেখে চলেছেন। দেশে-বিদেশে আলো ছড়াচ্ছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী। প্রতি বছরই অসংখ্য শিক্ষার্থী স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশ গমন করছেন। দেশের সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্রেও তারা নিজেদের জায়গা করে নিতে সক্ষম হচ্ছেন এবং নিষ্ঠার সাথে তাদের কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন।

শেয়ার করুন

২৪ বছরে পদার্পণ করলো বশেমুরবিপ্রবি

প্রকাশিত: ১২:৫৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের অদূরেই ছায়া নিবিড় পরিবেশে অবস্থান করছে ৫৫ একরের বশেমুরবিপ্রবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূন্যভূমিতে তার নাম অনুসারে ২০০১ সালের ৮ই জুলাই জাতীয় সংসদে এক আইন পাশের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো ১৯৯৯ সালে।

১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এম খায়রুল আলম খানকে প্রকল্প পরিচালক নিযুক্ত করে গোপালগঞ্জে পাঠানো হয়। ২০০১ সালের ৮ জুলাই মহান জাতীয় সংসদে আইন পাসের পর একই বছরের ১৩ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ১৯ জুলাই মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. খায়রুল আলমকে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে চারদলীয়জোট জলীয় জোট ক্ষমতায় আসলে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। ২০০২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।

২০০৮ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প আবার আশার আলো দেখে। ২০০৯ সাল থেকে আবার পুনরায় পূর্ণ গতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়।

২০১০ সালের ৫ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে নিয়োগ করেন এবং ২০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ আইন-২০০১ বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসআরও জারি করে। পরবর্তীতে ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান প্রফেসর ড. এম. খায়রুল আলম খানকে পুনরায় ৪ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।

২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র চারটি অনুষদ নিয়ে একাডেমিক যাত্রা শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে চারটি অনুষদ; প্রকৌশল, বিজ্ঞান, ব্যবসা অধ্যয়ন এবং মানবিক অনুষদে পাঁচটি বিভাগ যথাক্রমে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক্স, গণিত, ব্যবস্থাপনা ও ইংরেজি বিভাগ খোলা হয়। প্রতি বিভাগে ৩২ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে ৭টি অনুষদের অধীনে ৩৪টি বিভাগ ও ৩টি ইনস্টিটিউটে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের তথ্য মতে, শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য নিয়োজিত রয়েছে ২৭২ জন শিক্ষক। এর পাশাপাশি ১১২ জন কর্মকর্তা ও ২৫১ জন কর্মচারীর সমন্বয়ে চলছে বশেমুরবিপ্রবি।

৫৫ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে একটি ১০ তলা বিশিষ্ট আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক হল। যথাক্রমে- বিজয় দিবস হল, স্বাধীনতা দিবস হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শেখ রেহানা হল, শেখ রাসেল হল।

এছাড়া প্রশাসনিক ভবন, একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরি ভবন, ক্যাফেটারিয়া, কেন্দ্রীয় মসজিদ, মন্দির।নির্মাণাধীন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- মেইন গেট, ১৫ কোটি ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, আইটি পার্ক ইত্যাদির নির্মান কাজ চলমান রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অবসর সময় কাটানোর জন্য রয়েছে জয়বাংলা চত্ত্বর, আই+ওয়ান চত্ত্বর, ফুচকা চত্ত্বর, শেখ হাসিনা চত্ত্বর, শহীদ মিনার, আইআর চত্ত্বর, আইন চত্ত্বর, অর্ঘ্য চত্ত্বর, লিপুস ক্যান্টিন, বালুর মাঠ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, লেকপাড়, টিলা।

প্রতি বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও গবেষণায় ভূমিকা রেখে চলেছেন। দেশে-বিদেশে আলো ছড়াচ্ছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী। প্রতি বছরই অসংখ্য শিক্ষার্থী স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশ গমন করছেন। দেশের সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্রেও তারা নিজেদের জায়গা করে নিতে সক্ষম হচ্ছেন এবং নিষ্ঠার সাথে তাদের কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন।