পদত্যাগ করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। রোববার বিকালে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ভিসির পদ থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পূর্বের নিজ পদে যোগদান করেছেন।
বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বুয়েট অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন। আজ ১৮ আগস্ট, রবিবার থেকে শুরু হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।
ইতোমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কলেজে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে এবং চলমান সমস্যা নিরসনের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি প্রস্তুত করেন। এই ৯ দফা দাবি সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাদের নিজ নিজ কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়ের মাধ্যমে মাননীয় উপাচার্য বরাবর ৯ দফা দাবি পেশ করার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থী কর্তৃক উত্থাপিত এই ৯ দফা দাবিগুলো হলো:

১। সেশনজট নিরসন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট নিরসন করতে হবে। সেই লক্ষে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ১ বছরের মধ্যে ১টি সেশনের ফরম ফিলাপ, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ করে সেশন সমাপ্ত করতে হবে। প্রয়োজনে পূর্বের মতো ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেশনজট নিরসন করতে হবে।

২। পরীক্ষার খাতার সঠিক মূল্যায়ন: পরীক্ষার খাতার সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। ভালো পরীক্ষা দেয়ার পরেও অনেক সময় অস্বাভাবিক রেজাল্ট আসে, এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পুরোনো সমস্যা যা মোটেও কাম্য নয়, এই সমস্যা সমাধানের জন্য খাতা রিভিউ সিস্টেম চালু করতে হবে এবং উত্তরপত্র পুন:নিরীক্ষণের ফি ৮০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

৩। নিয়মিত ক্লাস ব্যবস্থা: নিয়মিত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে কলেজে ক্লাস নিয়মিত হচ্ছে কিনা পরিদর্শক দ্বারা তদারকি করতে হবে। সবাই ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিত থাকার জন্য ৭৫% উপস্থিতির নিয়মটির প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

৪। হটলাইন/যোগাযোগ ব্যবস্থা : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য একটি সচল নাম্বার থাকতে হবে। যাতে একজন শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারে। একটি অভিযোগ নাম্বার থাকতে হবে যাতে কোন শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর নিকট অভিযোগ জানাতে পারে।

৫। অযাচিত ফি নেয়া বন্ধ: অযাচিত অতিরিক্ত ফি নেয়া বন্ধ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি কলেজে অনেক অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করে থাকে। কোন কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করা ফি এর বেশি নিতে পারবে না এই ব্যাপারে নোটিশ দিতে হবে এবং অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগ পেলে যাচাই করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬। সমাবর্তন ব্যবস্থা: নিয়মিত এবং বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবর্তন আয়োজন করতে হবে। সমাবর্তন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবার কারণে ঢাকার বাইরের অনেক শিক্ষার্থী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারেনা। ঢাকার বাইরে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবর্তন আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭। ইনকোর্স/ভাইভা/প্রেজেন্টেশন ব্যবস্থা : ইনকোর্স পরীক্ষার নম্বরে পরিবর্তন আনতে হবে ইনকোর্স ১০ মার্ক,ক্লাস প্রেজেন্টেশন/এসাইনমেন্ট ৫ মার্ক,ক্লাস এটেনডেন্স ৫ মার্ক করে নির্ধারণ করতে হবে।এছাড়া প্রতি ইয়ারে ২ ক্রেডিটের ভাইবা চালু করতে হবে।

৮। রেজাল্ট সার্ভার আপডেট: রেজাল্টের সার্ভার আপডেট করতে হবে। যে কোন পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হবার পর সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। এতে করে অনেক শিক্ষার্থী মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়। সার্ভার আপগ্রেড করতে হবে অথবা বিএ/বিবিএ/বিএসএস/বিএসসি কোর্সের ফলাফল আলাদাভাবে প্রকাশ করা যেতে পারে।

৯। একাডেমিক ও এক্সামিনেশন সার্ভিস: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বাতিল,মূল সনদ আবেদন, ডকুমেন্টস কারেকশন সহ সকল সার্ভিস গুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং সার্ভিস সংক্রান্ত একটা নাম্বার ও ইমেইল রাখতে হবে। অনেক সময় আবেদন করার পর নানারকম সমস্যা দেখা দেয় যার কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আসতে হয় এই হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

আফসারাহ্‌ জাহান আশা
কুমুদিনী সরকারি কলেজ, টাংগাইল।
০১৫৫৩২৫৬৭৮৭
১৮ আগস্ট, ২০২৪।