জাবি শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে অধ্যাপক সোহেল ও অধ্যাপক শিরিন
- প্রকাশিত: ০৪:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 29
জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে। এতে সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা ও সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) এর অধ্যাপক আইরিন আক্তার।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয় এবং দুপুর ১টায় শেষ হয়। নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. অনিরুদ্ধ কাহালি ভোট গননা শেষে দুপুর আড়াইটা নাগাদ ফলাফল ঘোষণা করেন।
জাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন-২০২৫ এ সর্বমোট ১৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়। এতে ১৪টি পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু সম্পাদক পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে অধ্যাপক আইরিন আক্তার সর্বোচ্চ ১৯১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। সম্পাদক পদে অন্য দুই প্রার্থী হলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এবং পদার্থবিজ্ঞান অধ্যাপক মো. কবির উদ্দিন সিকদার । তারা ভোট পেয়েছেন যথাক্রমে ১৫৭ ভোট ও ৮০ ভোট। এদের মধ্যে অধ্যাপক আইরিন আক্তার ও অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত এবং অধ্যাপক মো. কবির উদ্দিন সিকদার স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যানারে নির্বাচন করেছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. এমরান জাহান। তিনি নির্বাচিত হয়েছেন সহ সভাপতি পদে। কোষাধ্যক্ষ পদে ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মাসুম শাহরিয়ার, যুগ্ম-সম্পাদক পদে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রায়হান শরীফ।
নির্বাহী সদস্যের ১০টি পদের নির্বাচিত সদস্যরা হলেন- ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু সাঈফ মো. মুনতাকিনুল বারী চৌধুরী, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম, অধ্যাপক আমিনুর রহমান খান, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক কো. লুৎফুল এলাহী, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাহিদ আখতার, প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন,অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুস সবুর। তারা সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
উক্ত নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতি অধ্যাপক সোহেল রানা, কোষাধ্যক্ষ মাসুম শাহরিয়ার, যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ রায়হান শরীফ, নির্বাহী সদস্য আবু সাইদ মো. মুনতাকিমুল বারী চৌধুরী, আমিনুর রহমান খান, নাহিদ আখতার, বোরহান উদ্দিন, মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷ তাঁরা সবাই বিএনপিপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে নির্বাচিত কমিটিতে সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. এমরান জাহান, নির্বাহী সদস্য খো. লুৎফুল এলাহী, আমিনা ইসলাম, মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান, মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, মো. আবদুস সবুর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷ তারা সবাই আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এ নির্বাচনে মো. আবদুস সবুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ইমরান জাহান বলেন, বিগত সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন সুযোগ ছিলো না। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে নির্বাচিতরা প্রশাসনের কাছ থেকে সুবিধা নিত। জুলাই বিপ্লব আন্দোলনে কোন শিক্ষক সমিতিই শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করেনি। কিন্তু আমরা এর পরিবর্তন চাই। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চাই। প্রশাসন যদি কোন অনিয়ম বা দূর্নীতির সাথে যুক্ত হয় তাহলে তার প্রতিবাদ করবো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল সমস্যাগুলো সমাধানে গুরুত্ব দেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, সদ্য সমাপ্ত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্যদেরকে আমরা কোন দলের লোক হিসাবে গণ্য করিনি। বিগত জুলাই বিপ্লবে দল-মতের উর্ধ্বে উঠে ‘শিক্ষক ঐক্য ফোরামের ব্যানারে’ শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন কিছু জাবি শিক্ষক। তাদের পক্ষ থেকেই নির্বাচনটা করা হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হয়ে অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করলে ব্যাপারটা আরও ভালো হতো কিন্তু সেটার সুযোগ তো হলো না। তবে এখানে দলীয় কোন প্রভাব বা চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। আশা করি, সবার সম্মিলিত চেষ্টার মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগরের জন্য ভালো কিছু আসবে।
জোবায়ের জাকির
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়