০৬:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গৃহকর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজ ও গৃহকর্মী ফোরামের উদ্যোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০৩:২৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 44

গৃহকর্মীদের সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ডিনেট কনফারেন্স হলে দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) এবং সুনীতি প্রকল্পের সহযোগিতায় গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরাম এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন, যার মধ্যে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা, গৃহকর্মী, নিয়োগকর্তা, আইনজীবী এবং সাংবাদিক।
সভার শুরুতে সুনীতি প্রকল্পের মোহাম্মদপুর হাবের প্রকল্প কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র অধিকারী শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। পরে প্রকল্প ব্যবস্থাপক আফরিন আক্তার গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও নীতিমালা ২০১৫ নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি গৃহকর্মীদের অধিকার ও মর্যাদার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া নাগরিক অধিকার।”
ডিএসকের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী শিল্পী সাহা, মোহাম্মদপুর থানা নারী ও শিশু ডেস্কের ইনচার্জ মমতাজ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের নার্গিস সুলতানা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মোহাম্মদ সজীব, এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার এমডি ফকর উদ্দিন।
শিল্পী সাহা গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় আইনি পদক্ষেপ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি গৃহকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন বলেন, “শ্রমিক হিসেবে গৃহকর্মীদের স্বীকৃতি দিতে হবে। শ্রমিক ছাড়া পৃথিবী চলে না। প্রত্যেক মানুষ শ্রমিক।

IMGpublician today20250116publician todayWA0015publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ
গৃহকর্মী মর্জিনা সুলতানা বলেন, আমরা গর্বের সঙ্গে বলি যে আমরা গৃহকর্মী। সুনীতি প্রকল্প আমাদের বিভিন্ন ট্রেনিং দিয়েছে, যা আমাদের দক্ষতা উন্নত করেছে। তবে, আমাদের একটাই দাবি—শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি এবং সরকারি সুবিধা।
গৃহকর্মী স্বপ্না আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, আমাদের শ্রমের মূল্যায়ন নেই। আমাদের হাত পা ভেঙে ফেলেন, ভবন থেকে ফেলে দেন। আমরা চাই, আমাদের বোয়া না বলে আমাদের নাম ধরে ডাকা হোক। আমি স্বপ্না, আমাকে স্বপ্না বলে ডাকলে খুশি হয়ে কাজ করব।
ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি এমডি ফকর উদ্দিন গৃহকর্মীদের সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তিনি বাসাবাড়িতে গ্যাস এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহারের উপর জোর দেন। ফায়ার সার্ভিসের জরুরি যোগাযোগ নম্বর ১০২ এবং ৯৯৯ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সভা শেষে মোহাম্মদপুর গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরামের সভাপতি হুমায়রা বেগম সমাপনী বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “গৃহকর্মীদের মর্যাদা রক্ষায় আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে। গৃহকর্মী জাতীয় ফোরামের সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ থেকে তাদের দাবি আদায়ে কাজ করছেন।
সভায় গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন, এবং নিয়োগপত্রের বাধ্যবাধকতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, সাংবাদিক, এবং বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা।

গৃহকর্মীদের দাবি বাস্তবায়ন এবং তাদের মর্যাদা রক্ষার এই প্রচেষ্টা শুধু একটি প্রকল্প নয়, বরং একটি আন্দোলন। বক্তারা গৃহকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

প্রতিবেদক
শাহারিয়া আহমেদ নয়ন

শেয়ার করুন

গৃহকর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজ ও গৃহকর্মী ফোরামের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৩:২৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

গৃহকর্মীদের সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ডিনেট কনফারেন্স হলে দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) এবং সুনীতি প্রকল্পের সহযোগিতায় গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরাম এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন, যার মধ্যে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা, গৃহকর্মী, নিয়োগকর্তা, আইনজীবী এবং সাংবাদিক।
সভার শুরুতে সুনীতি প্রকল্পের মোহাম্মদপুর হাবের প্রকল্প কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র অধিকারী শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। পরে প্রকল্প ব্যবস্থাপক আফরিন আক্তার গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও নীতিমালা ২০১৫ নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি গৃহকর্মীদের অধিকার ও মর্যাদার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া নাগরিক অধিকার।”
ডিএসকের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী শিল্পী সাহা, মোহাম্মদপুর থানা নারী ও শিশু ডেস্কের ইনচার্জ মমতাজ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের নার্গিস সুলতানা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মোহাম্মদ সজীব, এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার এমডি ফকর উদ্দিন।
শিল্পী সাহা গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় আইনি পদক্ষেপ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি গৃহকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন বলেন, “শ্রমিক হিসেবে গৃহকর্মীদের স্বীকৃতি দিতে হবে। শ্রমিক ছাড়া পৃথিবী চলে না। প্রত্যেক মানুষ শ্রমিক।

IMGpublician today20250116publician todayWA0015publician todayপাবলিকিয়ানpublician todayটুডেpublician today|publician todayবাংলাদেশpublician todayওpublician todayবিশ্বেরpublician todayসর্বশেষpublician todayসংবাদ
গৃহকর্মী মর্জিনা সুলতানা বলেন, আমরা গর্বের সঙ্গে বলি যে আমরা গৃহকর্মী। সুনীতি প্রকল্প আমাদের বিভিন্ন ট্রেনিং দিয়েছে, যা আমাদের দক্ষতা উন্নত করেছে। তবে, আমাদের একটাই দাবি—শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি এবং সরকারি সুবিধা।
গৃহকর্মী স্বপ্না আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, আমাদের শ্রমের মূল্যায়ন নেই। আমাদের হাত পা ভেঙে ফেলেন, ভবন থেকে ফেলে দেন। আমরা চাই, আমাদের বোয়া না বলে আমাদের নাম ধরে ডাকা হোক। আমি স্বপ্না, আমাকে স্বপ্না বলে ডাকলে খুশি হয়ে কাজ করব।
ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি এমডি ফকর উদ্দিন গৃহকর্মীদের সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তিনি বাসাবাড়িতে গ্যাস এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহারের উপর জোর দেন। ফায়ার সার্ভিসের জরুরি যোগাযোগ নম্বর ১০২ এবং ৯৯৯ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সভা শেষে মোহাম্মদপুর গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরামের সভাপতি হুমায়রা বেগম সমাপনী বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “গৃহকর্মীদের মর্যাদা রক্ষায় আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে। গৃহকর্মী জাতীয় ফোরামের সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ থেকে তাদের দাবি আদায়ে কাজ করছেন।
সভায় গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন, এবং নিয়োগপত্রের বাধ্যবাধকতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, সাংবাদিক, এবং বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা।

গৃহকর্মীদের দাবি বাস্তবায়ন এবং তাদের মর্যাদা রক্ষার এই প্রচেষ্টা শুধু একটি প্রকল্প নয়, বরং একটি আন্দোলন। বক্তারা গৃহকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

প্রতিবেদক
শাহারিয়া আহমেদ নয়ন