চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ছাত্রলীগের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরলো বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
- প্রকাশিত: ০১:৩৭:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
- / 26
বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আশরাফুল হক হলের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি একটি ‘টর্চার কর্নার’ তৈরি করেন, যেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়। ওই কর্নারে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের জখমের ছবি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে হলের জুলাই বিপ্লব শীতকালীন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগে অস্থায়ীভাবে নির্মিত ‘টর্চার কর্নারে’ নির্যাতনের ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়।
আশরাফুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলম মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল হক, মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির, এগ্রোমেটিওরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান এবং সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আশরাফুল হক হলের শিক্ষার্থীরা ‘জুলাই বিপ্লব কর্ণার’ স্থাপন করে জুলাই আন্দোলনকে তুলে ধরে এবং টুর্নামেন্ট উপলক্ষে ‘খেলাধুলা কর্ণার’ তৈরি করে।
এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি প্রকাশ করেন।
আশরাফুল হক হলের আবাসিক ছাত্র রিফাত বিন শায়েকুজ্জামান জানান, ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে ক্লাস শেষে হল থেকে বের হওয়ার সময় সিনিয়রদের দ্বারা গেস্টরুমে ডেকে নেয়া হয় এবং সেখানে তাকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। একাধিক ব্যক্তি তাকে থাপ্পড় ও লাথি মারে এবং পরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে নিয়ে আরও মারধর করা হয়। হকি স্টিক ও প্লাস ব্যবহার করে নির্যাতন চালানো হয়, যার ফলে তার কানের পর্দা ফেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। এরপর পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বাধ্য করা হয় এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ধরে নির্যাতনের পর তাকে হলে রাখা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
একই দিনে আরেক শিক্ষার্থী মো. তৌহিদুল ইসলামও ছাত্রদল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নির্যাতনের শিকার হন। তিনি জানান, রক্তদান করার কারণে শরীর দুর্বল থাকার পাশাপাশি তার অ্যাজমার সমস্যাও ছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে মারধর করা হয়। রড দিয়ে হাঁটুতে আঘাত করার ফলে তিনি মাটিতে পড়ে যান এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে জোরপূর্বক ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ফেরার পর তাকে ছাত্রদল বলে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।
রিসালাত আলিফ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ