রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে নোবিপ্রবি শিবিরের ‘মধ্যাহ্নভোজের’ আয়োজন
- প্রকাশিত: ০৯:২৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫
- / 1091
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকা সত্ত্বেও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের নিয়ে মধ্যাহ্নভোজ ও কুরবানি গোশত বিতরণের কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নোবিপ্রবি শাখা।
রবিবার (৮ জুন) নোবিপ্রবির পার্শ্ববর্তী এলাকা ও অভ্যন্তরে কোরবানি মাংস বিতরণ এবং ছাত্রদের নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রশিবির। ‘ছাত্রশিবির নোবিপ্রবি’ নামে একটি পেইজ থেক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তা প্রচার করেছে সংগঠনটি।
জানা যায়, ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার বাহিরে গরু কোরবানি দেওয়া হয় । পরবর্তীতে তা পার্শ্ববর্তী অসচ্ছল পরিবার এবং ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে কর্মচারী ও আনসারদের মাঝে বিতরণ করে। এছাড়াও ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের ডাইনিংয়ে দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সীমানার ভেতরে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার পরও কিভাবে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রিজেন্ট বোর্ডের ৪৫ তম আলোচ্য সূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি অথবা সর্বপ্রকার দলাদলি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সভায় সব ধরনের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে পুনরায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রজ্ঞাপন জারি করে কর্তৃপক্ষ।
ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ সত্ত্বেও কেন এই আয়োজন জানতে চাইলে নোবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আরিফুর রহমান সৈকত বলেন, “কোরবানি কোনো দলের রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নয় কিংবা দলীয় কর্মসূচীও নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ছাত্রশিবির প্রতিটি কোরবানিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কর্মচারী সহ পার্শ্ববর্তী পরিবারগুলোকে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগির অংশ হিসেবেই প্রতিবার মাংস বিতরণ করে থাকি। এটাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কিছুই নেই। হ্যাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ যেটা বিগত ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট প্রশাসন কর্তৃক একটা অবৈধ রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং এ চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত। যেটা একজন শিক্ষার্থীর নাগরিক অধিকারে অবৈধ হস্তক্ষেপের শামিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আপনাদের মাধ্যমে বর্তমান প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই অবিলম্বে সেই অবৈধ রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে সকল ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনকে তাদের রাজনীতি চর্চার নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এবং একই সাথে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতিকে লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত করা হোক। এই বিষয়টি আমি প্রশাসনের প্রতি দাবি রাখতে চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ.এফ.এম. আরিফুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দায়বদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় সকল ধরনের লেজুড়বৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে। ছাত্রদের শিক্ষাজীবনে কোনো প্রকার বিঘ্ন সৃষ্টি হোক তা আমরা চাই না। তাই, আমরা ক্রিয়াশীল সকল ছাত্রসংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। বন্ধের মধ্যে শিবিরের আজকের কার্যক্রম সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”