বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেলেন বিইউপির একই ব্যাচের ৮ শিক্ষার্থী
- প্রকাশিত: ০৪:২৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
- / 61
প্রত্যেকেই ছিলেন বিইউপি ইংরেজি বিভাগের ০৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেই পেয়েছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ।
শিক্ষকতাই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক ও সেরা পেশা।শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কাড়িগর। শুধু মানুষ গড়ার কাড়িগরই নন বরং জাতি ও জাতির মেরুদণ্ড গঠনেরও কাড়িগর কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষক যেন তার সম্মোহনী শক্তি দিয়ে গড়ে তোলেন একেকটি সোনার মানুষ, জীবনকে করেন সুন্দর। শিক্ষা একটি সমাজে আলোর ন্যায়। শিক্ষকরা সেই আলোবর্তিকা যারা নিজেকে প্রদীপের মতো জ্বালিয়ে আলোকিত করেন সমাজ। স্নেহ,মমতা,ভালোবাসা দিয়ে অনুপ্রানিত করেন শিক্ষার্থীদের। একটি সুন্দর সমাজ, সুশাসন, সশৃঙ্খল ও আদর্শ জাতি নির্মাণে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষা ছাড়া একটি আলোকিত সমাজ অকল্পনীয়। ভ্লাদিমির লেনিন বলেছেন, ‘মানুষের পরিবর্তন হচ্ছে সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত এবং শিক্ষকতা হলো সেই পরিবর্তনের অবিভাবক’।
এছাড়াও ইসলামেও শিক্ষা এবং শিক্ষকতার গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে বিভিন্ন সময়। ‘তোমরা জ্ঞান অর্জন করো এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আদব শিষ্টাচার শিখো। তাকে সম্মান করো, যার থেকে তোমরা জ্ঞান অর্জন করো।’~আল হাদীস
জীবনের সবক্ষেত্রে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে তারা লাভ করেন অমরত্ব; বেঁচে থাকের প্রতিটি ছাত্রের আদর্শে।
শিক্ষকতার সেই মহান ব্রত ধারণ করে সদ্য মাস্টার্স শেষ করা বিইউপি ইংরেজি বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের ৮ বন্ধু বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতা পেশা।
তাদের মধ্যে সায়েমা ইয়াসমিন শিক্ষকতা করেছেন রাজধানীর অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘প্রাইম ইউনিভার্সিটি’ তে এবং সাদিয়া জামান নিগার বর্তমানে সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
একই ব্যাচের নাফিসা আফরা পড়াশোনা শেষ করে এখন নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এ কর্মরত রয়েছেন।
রাজধানীর আরেকটি প্রতিষ্ঠান ‘শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’ তে শিক্ষকতা করছেন বিইউপি ১৮-১৯ সেশনের আরেক শিক্ষার্থী রিদ্ওয়ানা ইসলাম রোহামা।
তিনি শিক্ষক ও শিক্ষকতার অনুপ্রেরণা প্রকাশ করে বলেন, “শিক্ষক পরিবারে বেড়ে উঠার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই শিক্ষকতায় আসার স্বপ্ন দেখতাম। শিক্ষাজীবনের প্রতি স্তরে পাওয়া অসাধারণ সব শিক্ষক ও মা-বাবাই আমার শিক্ষকতার অনুপ্রেরণা। যখন দেখতাম, শিক্ষকেরা শুধু বইয়ের পাঠদান নয় বরং জীবনবোধ শেখাচ্ছেন বা তাদের ‘জাদুর ছোঁয়ায়’ কোনো ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে আমূল পরিবর্তন হচ্ছে, তখন সেই আকাঙ্ক্ষা আরও দৃঢ় হতো। এছাড়া, রোজকার নিত্য-নতুন চ্যালেঞ্জ ও ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মীদের থেকে শেখার সুযোগ আমায় প্রেরণা যোগায়। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের সারথি হয়ে তাঁদের স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম করার ইচ্ছা নিয়েই এই পেশায় আসা। আল্লাহ যেনো আমাকে ভালো মানুষ গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় সাহায্য করেন।”
এছাড়াও ‘উত্তরা ইউনিভার্সিটি’তে ইংরেজি বিভাগে একই সাথে লেকচারার ও প্রোগ্রাম কো-অরডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফাহিম আহমেদ ফয়সাল নামে একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী।
এবং সিলেট এর আরটিএম আল কাবীর টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি তে লেকচারার হিসেবে যুক্ত হয়েছেন মোহাম্মদ আসিফ চৌধুরি।
শাহজালাল সিদ্দীক শরীফ ও রাগিব মেহফুজ অনু প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেছেন মুন্সিগঞ্জের ‘হামদার্দ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’ এ। শাহজালাল সিদ্দীক শরীফ তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “প্রথম যখন জানতে পারি যে আমি প্রভাষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছি, তখন মনে হয়েছিল, এই দায়িত্ব আমার জন্য অনেক বড়। মনে হচ্ছিল, আমি কি প্রস্তুত?
তবে ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারি, এই দায়িত্ব শুধু শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়ায় নয়, বরং আমার নিজের শেখার প্রক্রিয়ায়ও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার সুযোগ দিচ্ছে। আমি উপলব্ধি করি, শিক্ষাদান কেবল পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান বিতরণ নয়, বরং জীবনকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার এক নতুন পথ। প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জ ও শিক্ষার সম্ভাবনা আমাকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। জীবন তখনই সবচেয়ে সুন্দর হয়ে ওঠে, যখন আমরা আমাদের অপ্রত্যাশিত দায়িত্বগুলোকে আলিঙ্গন করি এবং সেগুলোর মধ্যে নিজেদের সেরাটা খুঁজে পাই।”
তারা বলেন, “শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। এই মহান পেশায় যুক্ত হতে পেরে আমরা ধন্য। শিক্ষার আলো জ্বেলে একটি সুন্দর সমাজ তৈরীর জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব”।
১৫ সালে যাত্রা শুরু হবার পর ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রা বিইউপি, মিলিটারি ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনলজি, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনলজি, গ্রীন ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সফলতার সাথে শিক্ষকতা করছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল-বিইউপি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে শৃঙ্খলার সাথে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় রয়েছে দেশের সামরিক বাহিনী। সামরিক বাহিনীর পরিচালনায় এখানে পড়ছেন সামরিক ও সাধারণ পরিবারের শিক্ষার্থী রা। বিইউপি সেশনজট ও ছাত্র রাজনীতি মুক্ত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ইতোমধ্যেই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় প্রথম দিকে চলে এসছে।
হামীম আল ফুয়াদ, বিইউপি প্রতিনিধি