১২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পদত্যাগের হিড়িকে ছিদ্রযুক্ত ইবির নিরাপত্তার চাদর

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: ০১:১৩:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪
  • / 26

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইবি প্রতিনিধি :
সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রশাসনিক পদ থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন প্রায় সকল দপ্তরের দায়িত্বশীলরা। ফলে বিভিন্ন সেক্টরের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। নতুন করে প্রশাসনের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এক প্রকার আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, হল প্রভোস্ট, পরিবহন প্রশাসক, আইকিউএস ও ল্যাব ডিরেক্টর সহ বিভিন্ন দপ্তর এখন অভিভাবকশূন্য।

পদত্যাগের মিছিলের চিত্র তুলে ধরছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নূর ই আলম।

ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারারঃ
বৃহস্পতিবার (৮ আগষ্ট) সন্ধ্যায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূইয়ার পদত্যাগের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঐ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ একযোগে শিক্ষা সচিবের ইমেইল বরাবর তাদের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তারা ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন।

তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের তিন জনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের একজনের ব্যক্তিগত সহকারী বলেন, স্যাররা ৩ জনই একসাথে পদত্যাগ করেছেন। আজ সকালে পদত্যাগের বিষয়ে কথা হলেও তারা তখনো সিদ্ধান্ত নেন নাই বলে জানায়। কিন্তু দুপুরের পরে মন্ত্রণালয়ের ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। আমাকে বলেছে এসব নিয়ে কারোর সাথে ওতো কথা বলার দরকার নেই।

প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাঃ
শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল নিজেদের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এইচ. এম আলী হাসান বলেন, তাদের পদত্যাগ পত্রটি পেয়েছি। তারা দুজনের ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন। পরবর্তী প্রশাসন আসলে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আসলে প্রক্টরের কোন কাজে উপাচার্যের কাছে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসের উপাচার্য মহোদয় পদত্যাগ করছেন, তাই আমি চাইলেও আমার মতো করে কোন কাজ করতে পারবো না। তাই ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এই পদে আমার আর না থাকাই ভালো হবে। তাই পদত্যাগ করেছি।

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পদত্যাগের বিষয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ চিন্তা করছিলাম। আজ আমি একান্তই ব্যক্তিগত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। তবে পদে থাকি আর না থাকি আমি মনে করি শিক্ষকরা বেঁচে থাকেন শিক্ষার্থীদের মাঝে। আমি ভবিষ্যতে সবসময়ই আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের সাথে থাকার চেষ্টা করব।

৬ হল প্রভোস্টঃ
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রার বলেন, আজকে দুপুরে আমি ৬টি হল প্রভোস্টের পদত্যাগপত্র পেয়েছি। তাদের প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন।

পদত্যাগকারী প্রভোস্টবৃন্দ হলেন, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম, শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম, শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিপন মিয়া।

নূর ই আলম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

শেয়ার করুন

পদত্যাগের হিড়িকে ছিদ্রযুক্ত ইবির নিরাপত্তার চাদর

প্রকাশিত: ০১:১৩:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

ইবি প্রতিনিধি :
সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রশাসনিক পদ থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন প্রায় সকল দপ্তরের দায়িত্বশীলরা। ফলে বিভিন্ন সেক্টরের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। নতুন করে প্রশাসনের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এক প্রকার আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, হল প্রভোস্ট, পরিবহন প্রশাসক, আইকিউএস ও ল্যাব ডিরেক্টর সহ বিভিন্ন দপ্তর এখন অভিভাবকশূন্য।

পদত্যাগের মিছিলের চিত্র তুলে ধরছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নূর ই আলম।

ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারারঃ
বৃহস্পতিবার (৮ আগষ্ট) সন্ধ্যায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূইয়ার পদত্যাগের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঐ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ একযোগে শিক্ষা সচিবের ইমেইল বরাবর তাদের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তারা ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন।

তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের তিন জনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের একজনের ব্যক্তিগত সহকারী বলেন, স্যাররা ৩ জনই একসাথে পদত্যাগ করেছেন। আজ সকালে পদত্যাগের বিষয়ে কথা হলেও তারা তখনো সিদ্ধান্ত নেন নাই বলে জানায়। কিন্তু দুপুরের পরে মন্ত্রণালয়ের ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। আমাকে বলেছে এসব নিয়ে কারোর সাথে ওতো কথা বলার দরকার নেই।

প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাঃ
শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল নিজেদের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এইচ. এম আলী হাসান বলেন, তাদের পদত্যাগ পত্রটি পেয়েছি। তারা দুজনের ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন। পরবর্তী প্রশাসন আসলে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আসলে প্রক্টরের কোন কাজে উপাচার্যের কাছে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসের উপাচার্য মহোদয় পদত্যাগ করছেন, তাই আমি চাইলেও আমার মতো করে কোন কাজ করতে পারবো না। তাই ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এই পদে আমার আর না থাকাই ভালো হবে। তাই পদত্যাগ করেছি।

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পদত্যাগের বিষয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ চিন্তা করছিলাম। আজ আমি একান্তই ব্যক্তিগত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। তবে পদে থাকি আর না থাকি আমি মনে করি শিক্ষকরা বেঁচে থাকেন শিক্ষার্থীদের মাঝে। আমি ভবিষ্যতে সবসময়ই আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের সাথে থাকার চেষ্টা করব।

৬ হল প্রভোস্টঃ
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রার বলেন, আজকে দুপুরে আমি ৬টি হল প্রভোস্টের পদত্যাগপত্র পেয়েছি। তাদের প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন।

পদত্যাগকারী প্রভোস্টবৃন্দ হলেন, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম, শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম, শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিপন মিয়া।

নূর ই আলম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।